বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
ভারতের উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকা পড়া ৪১ জন শ্রমিকের সবাইকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ১৭ দিনের টানা চেষ্টার পর এই শ্রমিকদের উদ্ধার করা হলো।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের একটি দল আটকা পড়া ব্যক্তিদের একে একে বের করে আনে। একজন শ্রমিককে বের করে আনতে পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় লাগে।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স ফোর্স-এর একজন কর্মকর্তা প্রথমে উদ্ধারকাজ কীভাবে চলবে তা বোঝানোর জন্য পাইপের মাধ্যমে নিচে আটকা পড়া শ্রমিকদের কাছে যান। এ সময় তিনি তাদের কীভাবে উদ্ধার করা হবে তা বোঝান। পরে প্রত্যেক শ্রমিককে স্ট্রেচারের মাধ্যমে ৬০ মিটার গভীর ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বের করে আনা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে এনডিএমএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ হাসনাইন (অব.) বলেন, সারারাত ধরে অপারেশনটি চলবে। তবে আমরা আটকা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। ‘র্যাট মাইনার’ এবং সেনাবাহিনীর সাহায্যের মাধ্যমে আমরা ৫৮ মিটার পর্যন্ত খনন করতে পেরেছি।
খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের আদিম পদ্ধতির নাম র্যাট মাইনিং। এটি বর্তমানে আইনত অবৈধ হিসেবে ঘোষিত। ‘র্যাট মাইনার’ শ্রমিকদের ১২ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করতে হতো। আমেরিকান অগার ড্রিল মেশিন এবং অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে এমন গভীর খাদ খনন করা প্রায় অসম্ভব। সুরঙ্গে আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য আদিম এই পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
উদ্ধারকারী দলগুলো শেষ কয়েক মিটার পর্যন্ত ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করেছে বলে জানিয়েছে। অগার মেশিনসহ নানা ধরনের আধুনিক প্রচেষ্টা ব্যক্তি হওয়ার পর ‘র্যাট হোল মাইনিং’-এর মাধ্যমে প্রায় ৬০ মিটার খনন করে আটকা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করার পথ সুগম হয়।
এর আগে, গত ১২ নভেম্বর ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় নির্মাণাধীন একটি টানেলের ভেতরে ভূমিধসের কারণে ৪১ ভারতীয় শ্রমিক আটকা পড়েন।
উত্তরাখণ্ডের পর্যটন বিভাগে নিযুক্ত বিশেষ কর্মকর্তা ভাস্কর খুলবে বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কারিগরি ত্রুটির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অগার মেশিন কাজ বন্ধ করে দেয়। এ কারণে আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে কয়েক মিটার দূরত্বেই উদ্ধারকাজ থমকে যায়। তবে শুক্রবার দুপুরের দিকে আবার উদ্ধার কাজ শুরু হয়।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর আটকা পড়ার দশম দিনে ৪১ ভারতীয় শ্রমিককে প্রথমবারের মতো ক্যামেরায় জীবিত অবস্থায় দেখা যায়। উদ্ধারকারীদের কাছে শ্রমিকদের পাঠানো ভিডিওতে তাদের এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরার পাতলা পাইপের দিকে তাকাতে দেখা যায়। এই পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে অক্সিজেন, খাবার ও পানি পাঠানো হচ্ছে।