শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমিত সাহা ও কর্মচারী নাজির মো. মাঈনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভূমি সংক্রন্ত বিভিন্ন কাজে অর্থ আত্মসাৎ ও সরকারি কাজ বাস্তবায়নে ঘূষ দাবির ফের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা মশাবুনিয়া গ্রামের অলিউল্লাহ আহাদ গত ৩১ জানুয়ারি ২০১২১ তারিখে জনপ্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে জানাযায়, মৎস্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জলাশয় সংস্কার প্রকল্পে কাঠালিয়া উপজেলার বেশ কিছু খাল ও পুকুর প্রকল্পের ডিপিপিতে অন্তর্ভূক্ত হয়।
কিন্তু প্রকল্প প্রেরণের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবরে অনাপত্তি পত্র পাওয়ার আবেদন করা হলে উক্ত অনাপত্তি পত্রে ঘুষ দাবি করেন।
ঘুষের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করার কারনে উক্ত অনাপত্তিটি আটকে দেওয়া হয়েছে। এজন্য মৎস্য জলাশয় সংস্কার প্রকল্পের মৎস্য অফিস কর্তৃক প্রকল্প গ্রহন করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে কাঠালিয়ার মেসার্স ত্বহা ব্রিকস ফিল্ডে এসিল্যান্ড সুমিত সাহা, তার অফিসের নাজির মাঈনুলসহ অন্যান্য কর্মচারী, পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্য নিয়ে অভিযান চালায়।
এ সময় নানা অভিযোগ তুলে ইট ভাটার পার্টনার (মালিক) মোঃ শাহিন আকনের কাছে দশ লাখ টাকা দাবি করে।
পরে পার্টনার (মালিক) শাহিন আকন প্রথমে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা এসিল্যান্ড সুমিত সাহার অফিসে গিয়ে তাকে দেন।
টাকা কম হওয়ায় সে আরও ক্ষিপ্ত হয়। পরে শাহিন এসিল্যান্ডের কাছ থেকে এক ঘন্টা সময় নিয়ে আবার বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে এসে মোট চার লক্ষ টাকা সুমিত সাহাকে পৌছে দেন।
টাকা পাওয়ার পরে আটকৃত দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। টাকার রশিদ চাওয়া হলে সুমিত সাহার স্বাক্ষরিত মামলার (নম্বর ০৫/২০২১ইং) আদেশে (ক্রমিক নং ৪৮০৮২৩) এর দুই লক্ষ টাকার একটি রশিদ বাটার পার্টার (মালিক) শাহিনকে ধরিয়ে দেয়া হয় এবং বাকী দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
এ ঘটনা ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল হলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে ২৮ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মোঃ জোহর আলীর স্বাক্ষরিত (স্মারক নং ৩১.১০.৪২০০.০১২.০৪.০২৬.১৮-১০১ ও ১০২) কারণ দর্শানো নোটিশ এসিল্যান্ড সুমিত সাহা ও নাজির মাঈনুলকে দেয়া হয়। কারণ দর্শানো নোটিশ জবাব তিন কার্যদিবসের মধ্যে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এসিল্যান্ড সুমিত সাহাকে দেয়া জেলা প্রশাসকের এ কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, মোবাইল কোর্টকে যেমনি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তেমনি প্রশাসন ক্যাডারের ভাবমূর্তিও ভীষণভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। আপনি এর দায়ভার কোনো ভাবেই এড়াতে পারেন না। আপনার এহেন কর্মকান্ড সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ২ (খ) অনুযায়ী অসদাচরণের সামিল। এমতাবস্থায়, আপনার এহেন কর্মকান্ডের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে সুপারিশ করা হবে না তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা ০৩ (তিন ) কার্যদিবসের মধ্যে দেয়ার নির্দেশ দেয়া প্রদান করেন।
ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও আমাকে হয়রানী করার জন্য এ অভিযোগ করেছেন।
জণপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগের ব্যাপারে জানার জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমিত সাহা’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় কিন্তু ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন: কাঠালিয়ায় এসিল্যান্ডের লাখ লাখ টাকা একাধিক ব্যাংকে জমা দেয় নাজির