বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
কুড়িগ্রামে ডিজিটাল ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভাতা গ্রহীতারা। সঠিক মোবাইল নম্বর দিয়েও অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে ভাতা বঞ্চিত হবার অভিযোগ করছেন তারা।
নগদ কিংবা বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীরা টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় নম্বর ভুল এন্ট্রির কারণে অন্যত্র টাকা চলে যাচ্ছে বলে জানান তারা।
দীর্ঘদিন ধরে টাকা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রকৃত ভাতাভোগীরা। এ নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ভিড় করছেন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসরি বিকাশ বা নগদ কোম্পানির এন্ট্রিকৃত মোবাইল নম্বরে ভাতাভোগীদের টাকা পাঠায়। কিন্তু কোম্পানির এজেন্টের লোকজনের উদাসীনতায় ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বর ভুল এন্ট্রি করায় অনেক ভাতাভোগী দেড় বছর থেকে সেই টাকা পাচ্ছেন না। এসব ভাতার টাকা অন্যের মোবাইল নম্বরে চলে গেছে বলেও জানান তারা। যেসব মোবাইল নম্বরে টাকা গেছে সেসব নম্বরগুলো বন্ধ থাকারও অভিযোগ করেন তারা।
ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি ভাতার টাকা পেলেও পরে তা অনলাইন মাধ্যমে দেওয়া শুরু করলে অনেক ভাতাভোগীই টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর পর থেকে একটি অসাধু চক্র দরিদ্র এসব পরিবারের ভাতার টাকা আত্মসাৎ করছেন বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।
এমনকি নতুন করে ভাতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দালালদের কাছে উৎকোচের বিনিমিয়েও তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হতে পারছেন না।
কুড়িগ্রাম সমাজসেবা সূত্রে জানা যায়, জেলার নয়টি উপজেলায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহীতার সংখ্যা ২ লাখ ৩ হাজার ৬০৫ জন। এরমধ্যে মোবাইল নম্বর ত্রুটিজনিত কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে টাকা যাচ্ছে না ৭ হাজার ১০৭ জনের। এর মধ্যে সদরে আছেন ৩৬৬ জন, নাগেশ্বরীতে ২৯ জন, ভূরুঙ্গামারী ১১৭৩ জন, ফুলবাড়ি ২৩৮২ জন, রাজারহাট ৩৫২ জন, উলিপুর ৭২৯ জন, চিলমারী ১১৯ জন, রৌমারী ১৪২৩ জন এবং রাজিবপুরে ৫৩৪ জন। বিধি মোতাবেক প্রতি মাসে বয়স্ক-বিধবা ভাতা জনপ্রতি ৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা ৭৫০ টাকা হারে দেওয়া হয়।
কুড়িগ্রাম বলদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করেন কুচক্রী মহলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভাতা বঞ্চিত অনেকেই। সুবিধাভোগীদের টাকা অন্যত্র চলে গেলেও সেই টাকা ফেরত পাবার কোন সম্ভাবনা নেই। আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে টাকা ফেরতের দাবীও জানান এই জনপ্রতিনিধি।
প্রকৃত ভাতাভোগীরা টাকা না পাওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রোকোনুল ইসলাম দাবী করেন, কিছু অসাধু এজেন্টের কারণে টাকা ভুল নম্বরে গেলেও এর সাথে সমাজসেবার কেউ জড়িত নয়।
তিনি আরও বলেন, ভাতাভোগীদের এনআইডি ও মোবাইল নম্বরের পাশাপাশি আঙ্গুল কিংবা চোখের কর্ণিয়ার স্ক্যানের মাধ্যমে টাকা বিতরণ করা গেলে এই জটিলতাগুলো থাকবে না। এছাড়া ত্রুটিপূর্ণ ভাতাভোগীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ।