শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাঠালিয়ায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায় করলেন মুসল্লিরা গাবখান টোল ট্রাজেডি নিহত সেই ভিক্ষুক শহিদের পরিবারের পাশে রক্তযোদ্ধারা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ কাঠালিয়ার কাপড় ব্যবসায়ী মাহতাব উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন বৃষ্টির জন্য কাঠালিয়ায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় ঝালকাঠিতে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায় করলেন মুসল্লিরা তাপপ্রবাহে তৃষ্ণার্তদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করছে সামাজিক সংগঠন ইয়াস ঝালকাঠিতে তীব্র তাপদাহের মধ্যে উত্তপ্ত সড়ক ছাড়ছেন না ট্রাফিক পুলিশ হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু ভোগাচ্ছে জমে থাকা তাপ
রাজাপুরে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে পুত্রকে হত্যা করে পিতা, ন্যায় বিচারের দাবি

রাজাপুরে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে পুত্রকে হত্যা করে পিতা, ন্যায় বিচারের দাবি

ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রামে মো. আমির হোসেন তার পুত্র সিরাজুল ইসলাম ওরফে আলআমিন (২০)কে ৫০হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হত্যা করায়। নিজেই আবার হত্যা মামলার বাদী হয়ে দু’জনকে আসামী করে রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকালে এসআই মিজানুর রহমান পিতা আমির হোসেনসহ ৭জনকে  অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এ মামলার বিচারকার্যক্রম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চলমান আছে। আমির হোসেন মামলায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে বিভিন্ন স্থানে ও লোকজনের কাছে দৌড় ঝাপ করেছেন। পুত্র হারানোর শোকে নিহত আল আমিনের মা মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মহামান্য আদালত ও সরকারের কাছে ন্যায় বিচার দাবী করেন স্বজনরা।

ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত আলআমির ফুফাতো ভাই আ. বারেক, ও তার স্ত্রী রুবি বেগম এবং আরেক ফুফাতো ভাই ওবায়দুল হক আকনসহ আরো অনেকে।
মামলার নথিপত্র ও স্বজনরা জানান, সিরাজুল ইসলাম ওরফে আলআমিন গত ০৩-০৭-২০০৯ তারিখে হত্যার স্বীকার হয়। এঘটনায় আমির হোসেন বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় পরেরদিন ওই এলাকার হারুন অর রশিদ ও মন্টুকে আসামী করে মামলা (নং-০২, তারিখ- ০৪-০৭-২০০৯) দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের সময় আলআমিনের পরিহিত লুঙ্গির গোচরে থাকা মোবাইল (নোকিয়া ১১০০) সেটটি পরে গেলে তার সুত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মোজাম্মেল আকনকে গ্রেফতার ও মোবাইল উদ্ধার করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) রাজাপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দেয় মোজাম্মেল আকন। জবানবন্ধিতে তিনি আমির হোসেনের সাথে ৫০হাজার চুক্তিতে ৬জনে মিলে হত্যাকান্ড পরিচালনা করে। এ হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড আমির হোসেন মাস্টার উল্লেখ করে মোজাম্মেল আকন আদালতকে জানায়, মো. আমির হোসেনের অবাধ্য সন্তান আলআমিন। পিতার কাছে ৫লাখ টাকা দাবি করেছে। ওর দাবিকৃত টাকা না দিলে তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাবে। তাই তাকে হত্যা করতে না পারলে আজীবন এ নির্যাতন সহ্য করতে হবে। এজন্য আলআমিনকে খুন করতে আমাদের ৫জনকে দায়িত্ব দেয়। ৫০হাজার টাকা ব্যায়ে সে আমাদের সাথে চুক্তি করে।

ঘটনার দিন (০৩-০৭-২০০৯ তারিখ) রাতে তাকে খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার দায়িত্বও পালন করে আমির হোসেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী অচেতন আলামিনকে ঘর থেকে রাত ১১টায় গলায় তোয়ালে দিয়ে নামিয়ে নেয় রুহুল গাজী ও  মোজাম্মেল আকন। অচেতন অবস্থায় থাকায় আলআমিন চিতকার করতে না পারায় তাকে দরজায় নেয়া মাত্রই রুহুল, মোজাম্মেল,  মজিবর, রশিদ,  কুদ্দুস, বাবুল ঝাপটিয়ে ধরে আলামিনেরর গলায় তোয়ালে পেচিয়ে শোয়াইয়ে ফেলা হয়। এসময় আমির হোসেন ১০/১৫হাত দূরে দাড়িয়ে থেকে তা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন। ধস্তাধস্তিতে আলআমিনের লুঙ্গি খুলে গেলে গোচরে থাকা মোবাইলটি পরে যায়। সবাই ধরে টেনে হিচরে খাল পাড়ে নিয়ে শোয়াইয়া মোজাম্মেল আকন চাপাতি দিয়ে আলআমিনকে জবাই করে। মজিবর ও আইউব আলী পা, রুহুল গাজী ও রশিদ বুক, হাত, বাহু, মাথা চেপে ধরে।
বাবুল ও বেলায়েত টর্চ লাইট জ্বালিয়ে হত্যায় সহযোগিতা করে। জবাইয়ের পরে আমির হোসেনের নির্দেশে লাশ খালের ভিতরে ফেলে দেয়া হয়। এসময় হত্যাকারীরা “৫লাখ টাকা দিয়ে দিলাম” বলে উল্লাস করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আলামিনের ব্যবহৃত মোবাইলটি সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করি। একই স্বীকারোক্তি দিয়েছে হত্যাকান্ডে অগ্রভাগে অংশনেয়া মজিবুর রহমান মন্টু ও আব্দুর রশিদ বড় মিয়াও।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই মিজানুর রহমান সার্বিক তদন্ত কার্য সম্পন্ন করে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র (নং- ৬৫, তারিখ- ২৫-০৭-২০১০) দাখিল করেন। মামলার তদন্তকার্য চলাকালে আ. রশিদ বড় মিয়া মারা যাওয়ায় তাকে এ মামলার বিচারকার্য থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন আইও। মামলার অপর আসামী আইউব আলী ও কুদ্দুস গাজী  ইতিমধ্যে মারা গেছেন। এমামলার বিচার কার্যক্রমে প্রধান পরিকল্পনা ও হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী আমির হোসেন নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করে মামলা থেকে খালাস পেতে বিভিন্ন অপকৌশল চালাচ্ছে। পুত্র হারা শোকে মা মানসিক বিকারস্থ অবস্থায় আছেন সেই থেকেই।

ক্যাপশনঃ- ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে রাজাপুরের আলআমিন হত্যার ন্যায় বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা পাঠ করেন ফুফাতো ভাই ওবায়দুল হক আকন।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana