বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীর প্রস্থ কমিয়ে খনন করায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এক রিট পিটিশনের শুনানী শেষে রবিবার (৩০অক্টোবর) হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
কবি জীবানানন্দ দাশের লিখিত কবিতার বিষয়বস্তুর অস্তিত্ব মুছে ফেলতে ধানসিঁড়ি নদীর মূল প্রস্থ কমিয়ে ছোট এবং নালার মত করে নদী খননের বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
শুনানী শেষে (৩০অক্টোবর) রবিবার বিচারপতি মোঃ আশরাফুল ইসলাম এবং বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ারদী সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। একই সাথে হাইকোর্ট ধানসিঁড়ি নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণে প্রশাসনিক নিস্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না এবং প্রকৃত সীমানা অনুসারে ধানসিড়ি নদী খননের কেন নির্দেশ দেয়া হবেনা তা জানাতে পরিবেশ, পানি উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার সচিব, ডিজি পরিবেশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, এসি ল্যান্ড ও ওসি রাজাপুরকে নির্দেশ দেন।
শুনানীতে অংশ নিয়ে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে ধানসিঁড়ি নদী নিয়ে লেখা কবিতার মমার্থ মুছে ফেলার সকল কার্যক্রম চললেও প্রশাসন চোখ বুজে দখলদারদের অবৈধ কাজটি করতে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ধানসিঁড়ি নদীর মূল প্রশস্ততা অনেক কমিয়ে খননের ব্যবস্থা করে অবৈধ দখলকারীদের সুযোগ করে দিয়েছে যা আইন ও সরকারি নিয়ম কানুনের পরিপন্থি। ভবিষ্যতে অন্যান্য খাল নদী রক্ষার প্রয়োজনে এ ধরনের সংশ্লিস্টি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। তাদের এ কর্মকান্ড পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলাধার সংরক্ষণ আইন, সংবিধান এবং সরকারি সিদ্ধান্ত নীতির পরিপন্থি।
শুনানী শেষে আদালত রুল জারির পাশাপাশি নির্দেশনা প্রদান করেন, ১. ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ধানসিঁড়ি নদীতে আর যাতে কোন মাটি ভরাট, বাধ নির্মান, নির্মান কাজ না হয় তা বিবাদীদের নিশ্চিত করতে হবে। ২. আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ধানসিঁড়ি নদীর সিএস, আর এস অনুসারে সীমানার জরিপ এবং অবৈধ দখলদারদের নামের তালিকা আদালতে দাখিল করতে হবে। ৩. ঝালকাঠির জেলা প্রশাসককে ধানসিঁড়ি নদীর সংক্ষিপ্ত আকারে খনন এর নির্দেশদানকারী ব্যক্তিগণের বিষয় তদন্ত করে চিহ্নিত করতে হবে এবং পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব ও ডিজিকে উক্ত নির্দেশদানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গত ২৫ অক্টোবর এইচআরপিবির পক্ষে রীটটি দায়ের করেন এডভোকেট মোঃ ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং রিপণ বারৈ।