ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
সারাদেশে অনাবৃষ্টি ও তীব্র দাপদাহ অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টির আশায় আকাশপানে তাকিয়ে মানুষ। এমন অবস্থায় গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি কামনায় ঝালকাঠিতে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছেন শতাধিক মুসল্লিরা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শহরের পশ্চিম ঝালকাঠি গাবখান ফেরিঘাট জামে মসজিদ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই টুপি মাথায় জায়নামাজ নিয়ে মাঠে জড়ো হন স্থানীয় মুসল্লিরা। এতে ইমামতি করেন আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দিক। মসজিদের খতিব মাওলানা কাওছার হোসেন হামিদীর আয়োজনে খোলা আকাশের নিচে এ ইস্তিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হলে সর্বস্তরের মুসল্লিরা এ নামাজে অংশ নেয়।
শিশু, যুবক, মধ্য বয়সী বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলনান ইস্তসকার নামাজ আদায় শেষে মোনাজাতে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মহান আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে সবার আকুতিতে আমীন আমীন শব্দে চোখের পানি ফেলে ফেলে বৃষ্টির কামনায় ফরিয়াদ করেন।
নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লি মো. রাজু খান বলেন, বৃষ্টিবাদল নেই। খুব তাপ। ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টি না হবার কারণে কৃষিতে এক প্রকার বিপর্যয় নেমে এসেছে। আল্লাহ যেন তার রহমতের বৃষ্টি দিয়ে জমিনকে শীতল করে দেন। তাই বৃষ্টি চেয়ে নামাজের মাধ্যমে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে সবাই দোয়া করেছেন।
ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, অনাবৃষ্টি ও অতি তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এই অবস্থায় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমরা নিরুপায়। তাই এই দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির আশায় আকাশের নিচে খোলা মাঠে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে। নামাজ শেষে মহান আল্লাহ পাকের দরবারে মাফ চেয়ে কান্নাকাটি করেছেন মুসল্লিরা।
তিনি আরও বলেন, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণেই মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করতেন। সে জন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন।
আয়োজকরা জানান, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি গাছপালাসহ সবাই খুব কষ্টে আছে। এজন্য তারা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়েছেন। বৃষ্টির দেখা নেই নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে গেছে। দিন যায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।
গত কয়েকদিন ধরে ঝালকাঠিতে তাপদাহ চলছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। রোদে কাজ করতে গিয়ে শ্রমজীবী মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে। হাসপাতালে ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগের রুগীর চাপ বাড়ছে।