শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে দুই প্রান্তে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি ম্যুরাল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবির ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে জুলাই গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।
২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু। প্রকল্প পরিকল্পনায় ম্যুরাল নির্মাণের বিষয়টি ছিল না। ২০২২ সালের এপ্রিলে তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সেতু কর্তৃপক্ষের সভায় ম্যুরাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। পরের আড়াই মাসে মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তে ম্যুরাল দুটি নির্মাণ করা হয়।
তড়িঘড়ি নির্মাণের কারণে ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্রও আহ্বান করা হয়নি। ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনে সরাসরি ঠিকাদার (ডিপিএম) নিয়োগ করা হয়। তখনই অভিযোগ উঠেছিল, অতিরিক্ত ব্যয়ে ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র হলে ৪০-৫০ কোটি টাকায় একই কাজ করা যেত।
শেখ হাসিনা সরকার মহাসমারোহে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান করে। এ অনুষ্ঠান আয়োজনেও সরাসরি ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। খরচ হয় ৮৯ কোটি টাকা। সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও ৬ কোটি টাকা খরচ হয়। ম্যুরাল এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ২০০ কোটি টাকার খরচ করে তৎকালীন সরকার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের দিনেই স্থানীয়রা ম্যুরাল থেকে শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার মুখচ্ছবি তুলে ফেলে।
শুক্রবার সেতু বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জুলাই বিপ্লবের মহিমান্বিত স্মৃতি অম্লান রাখতে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের দিকনির্দেশনায় সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের ম্যুরালে বিশেষ গ্রাফিতি অঙ্কনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই শিল্পকর্মের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবের বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও গণতান্ত্রিক চেতনা সেতুর স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে মিশে এক অনন্য ইতিহাসবাহী শিল্পরূপে পরিণত হচ্ছে।
গ্রাফিতিতে শহীদ আবু সাঈদে দুই হাত প্রসারিত ছবি রয়েছে। রয়েছে ছাত্র-জনতাকে অভিবাদন জানিয়ে ‘স্যালুট সুজন’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া রিকশাচালক মোহাম্মদ সুজনের মুখচ্ছবি। অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারী শিশুদেরও মুখচ্ছবি রয়েছে গ্রাফিতিতে।