ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিরুদ্ধে আয়রন ব্রিজের মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজালাল আহম্মেদ ও তার সহযোগী সুমন এবং ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন তারা, সবুর ফকির ও মহিলা সদস্য তাজেদা বেগম এর স্বামী মো. বাবুল গাজীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ।
রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানাগেছে, ভেঙ্গে ফেলা ঐ আয়রন ব্রিজের টেন্ডার হলেও এখন পর্যন্ত কাজের কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। ব্রীজ ভাঙ্গার বিষয় তাদের কাছে কোন তথ্য ছিল না। স্থানীয়দের কাছ থেকে গত বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলার সত্যতা পায়। ব্রীজের কিছু মালামাল প্রকৌশলী উদ্ধার করে পরিমাপ করে স্থানীয়দের জিম্মায় রেখে আসেন।
সরেজমিনে মুক্তিযোদ্ধা বাবুল খলিফা, বেলায়েত হোসেন, নান্না তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন মিলন জানায়, গত দুই মাস পূর্বে মঠবাড়ি ইউনিয়নের ডহসংকর গ্রামের একটি আয়রন ব্রীজ টেন্ডার হওয়ার কথা শুনে ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহম্মেদ এর নেতৃত্বে ভেঙ্গে ফেলা হয়। পরে ঐ ব্রীজের মালামাল চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী সুমন সহ নাসির উদ্দিন, মহিলা মেম্বরের স্বামী মো. বাবুল গাজী ও সবুর ফকির তাদের নিজেদের মধ্যে ভাগ-ভাটোয়ারা করে সময় বুঝে নৌকা ও পিকআপ করে মালামাল সরিয়ে ফেলে। স্থানীয়রা আরো জানায়, কাজের অনুমতি ছাড়াই দুই মাস পূর্বে এই ব্রীজটি ভেঙ্গে ফেলায় তারা বর্তমানে চরম দুর্ভোগে রয়েছে। রাজাপুর উপজেলা সদরের সাথে ঐ ইউনিয়নের একাংশের প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ব্যবসা-বানিজ্যও এখন তাদের মন্দা। এমনকি রোগী নিয়ে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে তাদের প্রতিনিয়ত জামেলায় পড়তে হয়।
ব্রীজের ইট বহন করা পিকআপ চালক মো. নাসির হোসেন জানায়, মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহম্মেদ, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও বাবুল গাজীর নির্দেশনা অনুসারে চার গাড়ি ইট বহন করে তাদের দেখানো স্থানে পৌছে দেই।
তরিকুল ইসলাম সুমন বলেন, আমি ব্রিজ ভাংতে এবং মাল নিতে কে? ব্রিজ যারা টেন্ডার পেয়েছে তারাই ভাংছে এবং সব মালামাল ওখানেই আছে। চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষরা তার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য আমাকে জড়িয়ে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মঠবাড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মো. নাসির উদ্দিন তারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, ব্রীজের আশে-পাশের প্রত্যেকটি বাড়িতে ব্রীজের মালামাল রয়েছে। রাস্তায় কাঁদা থাকায় সেখানে দেয়ার জন্য আমি শুধু এক গাড়ি ইট নিয়েছি।
মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজালাল আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ব্রীজের সব মালামাল আমি রুমের মধ্যে জমা রেখেছি। পরে সরকারের কাছে জমা দিব। ইট মানুষে নিয়ে গেছে। দুই-এক খান ইট যদি রাস্তায় দেয়া হয় তা কি অপরাধ?
রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, চোরেতো চুরি করবেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্রীজের মাল জব্দ করি। এ ঘটনায় ডাইরী করতে থানায় গিয়েছিলাম কিন্তু ওসি সাহেব ডায়রী নেয়নি। সে আগে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তদন্ত করার কথা বলেছেন।