শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন

কাঠালিয়ায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্লেডের পোচ, ডাক্তার দেন গুরুতর জখমী সনদ

কাঠালিয়ায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্লেডের পোচ, ডাক্তার দেন গুরুতর জখমী সনদ

কাঠালিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্লেড দিয়ে নিজের মাথা কেটে হাসপাতালে ভর্তি হন আজিম মৃধা নামের এক যুবক। বেøডের আঘাতকে ধারালো দাওয়ের কোপ দেখিয়ে গুরুতর আঘাতের জখমী সনদ দেন ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ কামাল হোসেন মুফতি। সেই জখমী সনদ দিয়ে কোর্টে মামলা করে প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে আজিম মৃধার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উপজেলার চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের। সাজানো এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং ন্যাকরাজনক এ ঘটনা ঘটানোর জন্য আজিম মৃধার বিচার দাবী করছেন তারা।

এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানী করা হচ্ছে বলে জানান, স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য মো.সৈয়দ খান ও আঃ মন্নান হাওলাদার।

জানাগেছে, উপজেলার চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের রাসেল মৃধার সাথে একই বংশের আজিম মৃধাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। গত ১১ জুলাই বিরোধীয় জমিতে চাষাবাদ করতে যায় আজিম মৃধা ও তার লোকজন। বাঁধা দিলে জলিল মৃধার ছেলে রাসেল মৃধা, তার স্ত্রী ময়না বেগম ও চাচা খলিল মৃধাকে কুপিয়ে এবং তাসলিমা বেগকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে আজিম মৃধা ও তার লোকজন। স্থানীয়রা, আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে (আমুয়া) ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রাসেল মৃধা বাদী হয়ে গত ১৭ জুলাই আজিম মৃধাসহ ৫জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করেন (মামলা নং-৮/৫৪)। মামলার পরের দিন পুলিশ মামলার দুই আসামীকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করেন।

রাসেল মৃধার দায়ের করা মামলা থেকে রেহাই পেতে এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বেøড দিয়ে মাথা কেটে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন আজিম মৃধা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে গুরুতর জখমের সনদ সংগ্রহন করেন তিনি। এই সনদ দিয়ে ঘটনার ১ মাস ১২ দিন পর গত ২৩ আগষ্ট ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাসেল মৃধার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী আজিম মৃধার মা লাকি বেগম। (মামলা নং- ১৩১/২২)।

আদালতের নির্দেশে কাঠালিয়া থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে জানান, ঘটনার দিন মারামারি হয়েছে ঠিকই। তবে এতে আজিম মৃধা তেমন কোন আহত হয়নি। মামলা থেকে রেহাই পেতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে সে। আর ডাক্তার বা কিভাবে এ ধরনের জখমী সনদ দেন তা বুঝতে পারছেনা তারা।

এ ব্যাপারে আজিম মৃধা জানান, আমার পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে, রাসেল মৃধা ও তার বাবা জলিল মৃধাসহ কয়েকজন আমাদের ওপর হামলা করে।

রামপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সৈয়দ খান জানান, তার ওয়ার্ডের মৃধা বাড়ীতে জমির বিরোধ নিয়ে মারামারি হয়েছিল। জানামতে ওই ঘটনায় আজিম গুরুতর আহত হয়নি। পরে শুনি আজিম গুরুতর আহত সনদ দেখিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছে। একই বংশের লোক হয়ে এটা করা ঠিক হয়নি তার। একই কথা বলছেন, পাশর্^বর্তী মহিষকান্দি ওয়ার্ডের ইউপি মোঃ আঃ মন্নান হাওলাদারও।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই মামলার মো.মামুন জানান, ডাক্তারের সনদ অনুযায়ী আদালতে রিপোর্ট দেওয়া হবে।

পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডাঃ কামাল হোসেন জানান, মাঝে মাঝে আহত রোগীদের জখমী সনদপত্র দেওয়া হয়। কোন রোগীকে, কি ধরনের সনদ দেওয়া হয়েছে তা না দেখে বলতে পারবো না।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana