শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন

কাঠালিয়ায় দিনে-রাতে মাইকিং, উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ মানুষ

কাঠালিয়ায় দিনে-রাতে মাইকিং, উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ মানুষ

বার্তা ডেস্ক:

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় দিনে-রাতে মাইকিং এর উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ মানুষ। রিকশা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকে মাইক লাগিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারনার ব্যবহৃত মাইকের অতিরিক্ত ব্যবহারে বেশি শব্দ দূষণের সৃষ্টি হয়। উপজেলায় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগীদের আকৃষ্ট করতে মাইকের মাধ্যমে প্রচার প্রচারনা, গরুর মাংস, এলইডি বাল্ব, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্যাথলজি, কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার চালানো হয়। সড়কে বাস, ট্রাক, লরি, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, টেম্পো, অটোরিকশা, টমটমে হাইড্রোলিক হর্ন অতিমাত্রায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে উচ্চ শব্দে মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে মাত্রাতিরিক্ত ও অসহনীয় শব্দদূষণে সৃষ্টি হওয়ায় অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ রোগী ও পরীক্ষার্থীদের বেশি সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। শব্দ দূষণ প্রতিকারে আইন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, উপজেলায় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগীদের আকৃষ্ট করতে, মাংস বিক্রির জন্য, বৈদ্যুতিক বাতি বিক্রির জন্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বেশি প্রচার চালানো হয়। এছাড়া উপজেলা জুড়ে অটোরিকশা ও ইজিবাইকে মাইক লাগিয়ে এলইডি বাল্ব, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্যাথলজি, কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার মাইকের মাধ্যমে চলায় শব্দ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এসব প্রচার। এছাড়া সড়কে বাস, ট্রাক, লরি, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, টেম্পো, অটোরিকশা, টমটমে হাইড্রোলিক হর্ন অতিমাত্রায় ব্যবহার করায়ও শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকায় সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য উচ্চ শব্দের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দিনের বেলা ছাড়াও সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। ফলে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় গুলোতে দৈনন্দিন কাজ সারতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ এ সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দসীমা ৫৫ ডেসিবেল এবং রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ ডেসিবেল। একইভাবে নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫ ডেসিবেল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০ ডেসিবেল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ ডেসিবেল শব্দসীমা নির্ধারণ করা হয়। এই মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দ সৃষ্টি করাকে দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। বিধিমালায় হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সকল জায়গায় মোটর গাড়ির হর্ন বাজানো বা মাইকিং নিষিদ্ধ। বিধিমালায় শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম না করার শর্তে মাইক, অ্যামম্পিফায়ার ব্যবহার করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধানও আছে, কিন্তু কাঠালিয়ায় মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে কোন বিধান মানা হয় না।

উপজেলার আমরিবুনিয়া এইচ কে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লিয়াকত আলী জমাদ্দার বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মাইকিং এর শব্দে শ্রেণি কক্ষের পাঠদানে সমস্যা হয়। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না। এছাড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রবনে সমস্যা হয়। প্রতিকারের জন্য আইন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

কাঠালিয়া বাসষ্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী মো. গোলাম মাওলা জানান, কাঠলিয়াতে ডাক্তার ও গরু ব্যাবসায়িদের মাইকিং এর শব্দ দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ। এর কি কোন প্রতিকার নেই?

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আর এমও) চিকিৎসক মো. মিজানুর রহমান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে প্রতিদিন শতাধিক রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নেন। মুমূর্ষু রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। শব্দ দূষণের কারণে রোগীদের কানে সমস্যা হয় বেশি। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত শব্দের কারণে মানুষের শ্রবণ ও স্মরণ শক্তি কমে যায় এবং নিদ্রাহীনতা হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার  বলেন, যারা শব্দদূষণ করছে আমাদের সামনে পড়লে আমরা অব্যশই ব্যবস্থা নিব। এছাড়া কখন শব্দ দূষণ করছে আমাদের বলতে হবে, এমন সময় মাকিং বা শব্দদূষণ করছে আমি জানলাম না। তাই আমাদের কাছে অভিযোগ করলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana