মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৩ অপরাহ্ন

রাজাপুরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী তালগাছ! দেখা যাচ্ছেনা বাবুই পাখি

রাজাপুরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী তালগাছ! দেখা যাচ্ছেনা বাবুই পাখি

ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

কালের বিবর্তনে ঝালকাঠি জেলায় হারিয়ে যাচ্ছে তালগাছ, রস ও গুড়। বৃহত্তর ঝালকাঠি তথা ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া এলাকায় পরিপূর্ণ ছিলো তালগাছ গাছে। আজ তা বিলুপ্তির পথে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব তালগাছ। তাল পাতা দিয়ে ঘর ছাওয়া, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকবার পট, লেখবার পুঁথি, পুতুল ইত্যাদি বহুবিধ সামগ্রী তৈরী হয় এমনকি তালের কাট দিয়ে বাড়ি, নৌকা, হাউস বোট তৈরি করা হতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে গ্রামাঞ্চল থেকে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এ তালগাছ।

তালের ফল এবং বীজ দুই-ই বাঙালির জন্য সুস্বাধু খাদ্য। তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে গুড়, পাটালি, মিছরি তৈরি করা হতো। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান। তালগাছকে নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “তালগাছ, এক পায়ে দাড়িয়ে, উকি মারে আঁকাশে, সব গাছ ছাড়িয়ে,।” রবীন্দ্রনাথ তাল গাছকে একাকী এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ধ্যানী বলে উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাল গাছকে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে, ক্লাসে পড়া না পারা ছাত্রের সাথে তুলনা করেছেন। আমাদের দেশের পরিবেশ বান্ধব এই তাল গাছ আজ বিলুপ্ত প্রায়। তাল গাছের পাতার সাথে সুপরিচিত বাবুই পাখির সুনিপুণভাবে তৈরী পাতার সাথে ঝুলানো বাসা (আশ্রয়স্থল) সকলের পরিচিত।

গ্রামগঞ্জে আজকাল হাজার হাজার পাখির কিচির-মিচির ডাক আর মনোরম দৃশ্য চোখে পরে না। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতি হয়ে উঠছে বিরাগভাজন। সময় মত বৃষ্টি না হওয়া, আবার অতিবৃষ্টি, কালো মেঘের বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা এত বেশি যা ভাবিয়ে তুলছে। এ অবস্থায় তাল গাছ রোপণ, হেফাজত ও রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ প্রয়োজন।

রাজাপুর উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সাথে তালগাছ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, “তাল গাছের সকল অংশই মানুষের উপকারে আসে। এ গাছ রোপন করলে তাতে বেশী জমি দখল করেনা তাই জমিও নষ্ট হয় না। কোন সার ঔষুধ ব্যবহার করতে হয়না। কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। রোপন করার ১০ থেকে ১৫ বছর পরে তাল গাছে ফল ধরে। এ গাছ খুব শক্ত-পোক্ত হওয়ায় ঝড় বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম থাকে। তবে কৃষকরা দাবী করেন এ বিষয়ে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা এবং তদারকি থাকলে হয়তো গাছগুলো একটু বেশি করে রোপন করা হত।”

এবিষয়ে রাজাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসা. শাহিদা শারমিন আফরোজ বলেন,, তাল গাছ রোপনের ব্যাপারে আমরা কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করি এবং কিছু জায়গাতে চারা রোপন করা হয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় একটু কম। তিনি আরও বলেন এ বিষয়ে আমাদের কোন অর্থ বরাদ্ধ বা কোন প্রজেক্ট নেই।

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ 01774937755 অথবা ই-মেইল: kathaliabarta.com












All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana