ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে একশ বছরের পুরনো রেকর্ডীয় খালের মুখ বন্ধ করায় তিনশ বিঘা জমির আবাদ নিয়ে কৃষদের মাধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। এ ঘটনা উপজেলার বাদুরতলা পেদাবাড়ি সংলগ্ন সদাই খালি খালে।
স্থানীয় আব্দুর রহমান, বেল্লাল হোসেন, জব্বার মিয়া, আব্দুস ছত্তার জানায়, ‘সদাই খালি’ নামে পরিচিত খালটি বিষখালী নদী থেকে জাঙ্গালিয়া নদীতে যাওয়া যেত। একশ বছরের রেকর্ডীয় এই পুরনো খালটির জাঙ্গালিয়ার মাথা অনেক আগেই আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে মরে যায়। সম্প্রতি বিষখালী নদীর পাড় দিয়ে সদাই খালের উপর দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন ঠিকাদার স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুর ফকির। বেড়িবাঁধের ফলে কালভার্টসহ কালভার্টের নিচে পানি যাওয়া আসার পথও পরিকল্পিত ভাবে বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার।
এই খালের সাথে প্রায় তিনশ বিঘা জমির ভাগ্য জড়িয়ে রয়েছে। হঠাৎ খালের মুখ বন্ধ করায় ওই খালের পারে থাকা জেলেদের নৌকা খালের ভিতরে ও বাহিরে আটকা পড়ে আছে। তাছাড়া এলাকায় গভীর নলকুপ না থাকায় বাসাবাড়ির রান্না, গোসল, হাড়িপাতিল ধোয়ার কাজে এই খালের পানি ব্যবহার হতো। এমনকি স্থানীয়রা খালের পানি ফুটিয়ে পান করতেন। এই খালের পানি উঠে ফসলি জমিতে প্রবেশ করলে কৃষকরা চাষাবাদ করে ধান ফলায়।
এছাড়াও শুকনো মৌসুমে শীতকালিন ফসলের ক্ষেতে এ খালের পানি ব্যবহার করে থাকেন। এখন খালের মুখ বন্ধ করায় এ সকল জমি অনাবাদি হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে স্থানীয় কৃষকেরা। এমনকি বর্ষা মৌসুমে ঐ খালে পানি আটকা পড়েও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে বলেও তারা ধারনা করছেন। আবার ঐ পানি পঁচে বিভিন্ন পানিবাহী রোগ ছড়াবে বলে স্থানীয়দের দাবী। খাল বন্ধের ফলে সকলকে বিশখালি নদির পানির উপরে নির্ভরশীল হয়ে পরতে হবে যাতে বিপাকে পরতে হবে বয়ষ্ক এবং শিশুদের।
এ ব্যাপারে এই কাজের ঠিকাদার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মো. সবুর ফকির বলেন, রেকর্ডীয় খাল বন্ধ করে রাখার কোন সুযোগ নেই। স্থানীয় কিছুলোক জন মাটি কাটার বেকু চালককে খাল ভরাট করতে বলছে ওই খাল দিয়ে নাকি তাদের কোনো কাজ হয় না, খবর পেয়ে আমি গতকাল সোমবার ঘটনা স্থলে গিয়ে খালের মুখ খোলার জন্য বেকু চালককে বলে আসছি। এর পরেও না খুলে থাকলে বিষয়টি আমি দেখছি। তিনি আরো জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি কাজ করেন না এবং এই কাজের সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, তিনি এলজিইডি ঠিকাদারি কাজ করেন।
এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন জানান, ঠিকাদারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।