শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পরিশোধিত পাম তেলের ওপর ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে ভোজ্যতেল সয়াবিনের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৪ মার্চ) এই বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম এ প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয় এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং তা ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
প্রজ্ঞাপন বলা হয়, এসআরও নং-৫০-আইন/২০২২/১৭০-মুসক। সরকার, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) এর FIRST SCHEDULE-ভুক্ত পণ্যসমূহের মধ্যে স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত সব ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলো।
এর আগে গত ১ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে কাছে ভ্যাট প্রত্যাহারের বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বরাবর প্রেরিতে এই চিঠিতে বলা হয়, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের প্রভাবে স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল প্রায় ১৫৩০ মার্কিন ডলার এবং প্রতি টন অপরিশোধিত পাম তেল আন্তর্জাতিক বাজারে ১৫০৮ থেকে ১৫২০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা এবং প্রতি লিটার খোলা পাম তেল ১০০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে আমদানিকৃত অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল স্থানীয় মিলে পরিশোধিত হয়ে বাজারে প্রবেশ করলে প্রতি লিটার সয়াবিন ও পাম তেলের দাম আরও বাড়বে। ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় ভোজ্য তেলের বর্তমান দাম অস্বাভাবিক বলে প্রতীয়মান।
অপরিশোধিত তেলের বর্তমান মূল্য বিবেচনায় গত ৬ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। সে হিসেবে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত পাম তেল ও পামওলিন আমদানিতে এর শুল্কায়নযোগ্য দামের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলেও এ খাতে সরকারের কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমার সম্ভাবনা নেই। সেই সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় এ পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় গতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমানে আরোপিত উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট হতে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। তাই অত্যাবশ্যকীয় ভোজ্যতেলের বাজার মূল্য এবং সরবরাহ লাইনে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব খন্দকার নুরুল হকের সই করা চিঠিতে ২০১১ সালের উদাহরণ টেনে বলা হয়, এর আগেও ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে ছিল। তখন স্থানীয় বাজারে পরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম বাড়ে। সে সময় সরকার জন সাধারণের ক্রয়-ক্ষমতা বিবেচনায় এনে আমদানি পর্যায়ে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত পাম তেল ও পামওলিন আমদানিতে শুল্কায়নযোগ্য মূল্যের ৬৭ দশমিক ৬৭ শতাংশের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য এক তৃতীয়াংশ কমায়। ফলে ভ্যাটের হারও এক তৃতীয়াংশ কমে। পরবর্তীতে সময়ে সময়ে এসআরও জারির মাধ্যমে ওই আদেশের মেয়াদ ২০১৭ সালের ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ফলে সাধারণ ভোক্তারা এর সুফল পায়।