মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলে এডহক পকেট কমিটির তদন্তের বিরুদ্ধে ডিসির কাছে অভিযোগ

খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলে এডহক পকেট কমিটির তদন্তের বিরুদ্ধে ডিসির কাছে অভিযোগ

খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলে এডহক পকেট কমিটির তদন্তের বিরুদ্ধে ডিসির কাছে অভিযোগ

ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলে এডহক (আহবায়ক) কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগে তদন্তে পক্ষপাতমূলক ভুমিকা নেয়া ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর দুই দফায় অভিযোগ করেছেন স্কুলের জমিদাতার ছেলে মো. আলম হোসেন হাওলাদার।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের খাগড়াখানা এলাকার খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলে একটি ব্যবস্থাপনা/ম্যানেজিং এডহক (আহবায়ক) কমিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। কমিটি গঠনে মো. আব্দুল আজিজ খলিফা, ও তারই আপন ভাগিনা মো. মনিরুজ্জামান এবং ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে চাকুরী করেন তাহার ফুপাতো ভাই জালাল খলিফা। তারা তিনজনে একই পরিবারের মামা, ভাগ্নে ও ভাতিজা হওয়া সত্বেও তাদের তিন জনের নাম প্রস্তাবের জন্য প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক নির্দেশ প্রদান করেন নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ আলম, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে।অথচ স্কুলের জমি দাতা মো. মুজাহার আলী হাওলাদার, মো. শহিদুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মারুফ হোসেন থাকা স্বত্বেও একটি পরিবারের তিনজনের নাম প্রস্তাব করানো হয়। এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি জমিদাতা ও আজীবন দাতা সদস্যদের অবহিত না করে এবং বিদ্যালয়ে এবিষয়ে আলাপআলোচনা না করেই পকেট কমিটি করে তারা ওই তিনজনের নামেই প্রস্তাব করায়। এর বিরুদ্ধে জমি দাতা আলম হাওলাদার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নলছিটি উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বদরুল আমীনকে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে তিনি সরেজমিনে তদন্ত না করে অফিসে বসেই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করে তার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এমন অবৈধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ ও প্রতিকার চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি সকল ইউপি সদস্যরা ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষপাতমূলক হওয়ায় পুনরায় জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা মো. আলম হাওলাদার।

অভিযোগকারী মো. আলম হোসেন হাওলাদার বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাবরক্ষক মো. মোশাররফ হোসেন আমাকে তদন্তের তারিখ জানাতে গড়মিস করে ঘটনাস্থলে যাবার আগের দিন বিকালে আমার হোয়াট’স অ্যাপের মাধ্যমে নোটিশ পাঠিয়ে আবার মৌখিক ভাবে বলেন যে বুধবার আপনাদের স্কুলে তদন্ত হবে। চিঠিতে উল্লেখ আছে, ০৪-০২-২৫ খ্রি: ‘বুধবার’ সকাল ১০টায় উপস্থিত হয়ে তদন্তকার্য সম্পন্ন করবেন। কিন্তু ০৪-০২-২৫ তারিখ ছিলো ‘মঙ্গলবার’ আমি যাতে তদন্তের দিন না থাকতে পারি তার জন্যই মোশাররফ হোসেন এই কাজ করেন। তিনি বিবাদী পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আমাকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন বলে আমার ধারনা। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাবরক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, কম্পোজে ভূল হয়েছে সম্ববত কিন্তু তারিখ ঠিকই ছিলো।

একই বিষয় অস্বীকার করে নাচনমহল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম বলেন, পরিষদে প্রধান শিক্ষককে ডাকা হয়নি বরং সে নিজেই আমার মুঠোফোনে বলেন আপনার সাথে বসে একটা বিষয় পরামর্শ করবো এবং চা খাবো। এরপর তিনি আমার অফিসে আসেন।

এবিষয়ে খাগড়াখানা মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, পদ পদবি ধারি ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক, প্যানেল চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্যব্যাক্তি এবং আমার স্কুলের শিক্ষক কাউন্সিলের সাথে পরামর্শ করেছি তারা সবাই আব্দুল আজিজ খলিফার নাম প্রস্তাব করতে বলেছে তাই আমি আব্দুল আজিজ খলিফা, তার আপন ভাগিনা মো. মনিরুজ্জামান ও ফুফাতো ভাই জালাল খলিফার নাম দিয়েছি। অপর দিকে আলম হোসেন হাওলাদারের নাম প্রস্তাবের পক্ষে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলেও আলম হাওলাদারের নাম প্রস্তাব কেন করেননি এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক চুপচাপ থেকে সঠিক উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এবিষয়ে (ভারপ্রাপ্ত) জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আ. জব্বার বলেন, তদন্তের সময় বাদী পক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তদন্তে যাবার নোটিশ বাদীকে আমার অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্তরা জানিয়েছেন। আমাদের পথ দেখিয়ে নেয়ার জন্য ওই স্কুলের শিক্ষক আসলে তাকে আমার গাড়িতে নিয়ে স্কুলে যাই। তিনি ছাড়া অন্য কোন লোক আমাদের গাড়িতে ছিলো না। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসেছে কেন তা আমি বলতে পারবো না।

এব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন প্রক্রিয়া যথাযথ না হওয়ায় বিদ্যালয়টি পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুন্ন হবে এবং ভবিষ্যতে হুমকির মুখে পড়বে। ক্ষমতার অপব্যবহার করার উদ্দেশ্যেই এ এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা অনুসরণ করে কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পরিচালনার পথ সুগম করে শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনের সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান এলাকাবাসী। নয়তো এই এলাকার কোন লোককে স্কুল কমিটির সভাপতি না বানিয়ে উপজেলা প্রশাসন বা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়ার দাবী জানান।

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ ০১৮৪২২৫৩১২২












All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana