শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
আপাতত সপ্তাহে একদিন করে স্কুল-কলেজে ক্লাস নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কারণে যাতে আবার বেড়ে না যায়, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বর্তমানের পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সব ধরনের সুবিধা সম্পন্ন নবনির্মিত ‘ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সার্ভিস’র উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নওফেল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেওয়ার চিন্তা করলেও পরবর্তীকালে সেটা পরিবর্তনও হতে পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। করোনা সংক্রমণ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। অনেকদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে। যদিও আমরা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই ক্লাসে সশরীরে উপস্থিতির মতো হয়নি।
উপমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন পাঠদান বন্ধ থাকায় আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতিটা হয়েছে, সেটা যাতে দ্রুত পুষিয়ে নিতে পারি, সেদিকেই আমাদের দৃষ্টি থাকবে।
তিনি বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে সশরীরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টাও অব্যাহত আছে। নতুন সিলেবাসের রূপরেখা আমরা দাঁড় করিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নতুন সিলেবাস বাস্তবায়নসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
যাত্রা শুরু করা ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সার্ভিস প্রসঙ্গে উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনায় সব সুবিধাসম্পন্ন জরুরি এ ইউনিটটি স্থাপন করা হয়েছে। সরকারিভাবে হাসপাতালে এমন উদ্যোগ এটিই প্রথম বাস্তবায়ন হলো চট্টগ্রামে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরি সব চিকিৎসাসেবা প্রদানে এটি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। নতুন ইউনিটে চিকিৎসা পেলে হাসপাতালের ওয়ার্ডে বাড়তি রোগীর চাপ অনেক কমে আসবে। এছাড়া নতুন ইমারজেন্সি ইউনিটটির মাধ্যমে রোগীরা গুণগত চিকিৎসা সেবা পাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ূন কবির, চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আখতার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির প্রমুখ।
এরপর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড মিলনায়তনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের উদ্যোগে ‘কোভিড পরিস্থিতি: শিক্ষার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। সভা সঞ্চালনা করেন বোর্ডের উপ-সচিব মোহাম্মদ বেলাল হোসেন।
এতে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, কভিড কিন্তু একেবারে চলে যাবে না। এর সঙ্গেই আমাদের বসবাস করতে হবে। বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে আসবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় আমরা ভ্যাকসিন পেয়েছি, তা আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের দেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
সূত্র : সমকাল