বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

‘সব শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে পৌঁছে যাবে ট্যাব’

‘সব শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে পৌঁছে যাবে ট্যাব’

অনলাইন ডেস্ক:

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে একদিন ট্যাব বা ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে যাবে। সেদিন খুবই কাছে। যুক্তরাজ্যে শতকরা ৮৮ভাগ শিশুর হাতে ট্যাব আছে। তাদের বইয়ের দিকে তাকাতে হয় না। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেলিকম অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়েও প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা আনন্দময় করে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা পাঠ্যক্রম আবশ্যক। আগামাী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরের কোন বিকল্প নেই।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনে সামান্য ফল দেবে কিন্তু প্রাথমিকের ডিজিটাল রূপান্তরে শতভাগ ফল পাওয়া সম্ভব। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে কম্পিউটারে বাংলাভাষা প্রবর্তনের পাশাপাশি কম্পিউটারে প্রাথমিক শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ৮৭ খ্রিষ্টাব্দে ৩২টি কেন্দ্র্র থেকে ডিজিটাল শিক্ষার জন্য ডিজিটাল সফটওয়্যার নিয়ে কাজ শুরু করলেও বাংলার উপযোগী ডিজিটাল সফটওয়্যার তৈরি তখন সম্ভব হয়নি। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে আমি উপলব্ধি করি এই বিষয়টির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া দরকার।

এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে ১৩জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে দেশের প্রথম ডিজিটাল স্কুল নিয়ে যাত্রা শুরু করি। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি শিক্ষার্থীদের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছেন তিনি বলেন, বাচ্চাদের হাতে পাঠ্য বিষয়টি বাংলায় কন্টেন্ট করে দেয়ার প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় হলিক্রসের ইংরেজী শিক্ষক জেসমিন জুইয়ের মাধ্যমে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে তা সফলতায় রূপ নেয় এবং বর্তমানে প্রাক প্রাথমিকের তিনটি ও প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৫টিসহ মোট আটটি কনটেন্ট প্রাথমিক শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনের যাত্রায় মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে আইসিটি বিভাগ থেকে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও নানা প্রতিকুলতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। দুর্গম অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত অসহায় শিশুদের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলের মাধ্যমে গৃহীত উদ্যোগ শিক্ষার রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মাইল ফলক বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এর ফলে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর এগিয়ে নেয়ার পথে পরবর্তী করণীয় ও প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে, যা শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতা প্রদানে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেলিকম অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেসন প্রক্রিয়া শুরু হলো। এ সমঝোতার আওতায় হাওর, প্রত্যন্ত, অনগ্রসর ও দুর্গম এলাকার ৬৫০টি স্কুলের সব ক্লাসরুম ডিজিটাল হবে। এরমধ্যে ৩০টি স্কুলে শিশুরা বইবিহীন বা অনলাইনে ট্যাবে লেখাপড়া করতে পারবে। এসব ক্লাসে ডিজিটাল টিভি, আইপিএস ও ইন্টারনেট থাকবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পাওয়া ডিজিটাল কনটেন্ট দিয়ে পাঠদান করা হবে।

ডিভাইস ও ইন্টারনেট থাকলে শিশুরা বাড়িতে বসে বা অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে। বিটিআরসির সার্ভিস অবলিগেসন তহবিলের অর্থায়নে এ প্রকল্প ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। বেসরকারিভাবে ২০০০ ও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেশে চালু হলেও সরকারিভাবে কোন প্রকল্প গ্রহণ করে পাঠ্য বিষয়ের সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেসন করে যন্ত্রের সহায়তায় শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেসন এই প্রথম।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana