সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরের বারবাকপুর এলাকায় দখলদারের হাত থেকে শত বছরের পুরোনো রাস্তা উদ্ধার করতে পেরে আনন্দে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবাকপুর দারুস সুন্নত দীনিয়া এতিম খানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে দীর্ঘ ২২ বছর জে এল নং ৩১, খতিয়ান -১, দাগ নং ৮৩১, ১৪০`×৮` বর্গফুট পরিমাণ জমি ভোগদখল করে এলাকা বাসীর হাটার রাস্তা বন্ধকরে রাখে। দখলদারের হাত থেকে রাস্তাটি ফিরে পেয়ে সোমবার (২০ নভেম্বর) সকালে এলাকাবাসী রাস্তাটি মেরামত শুরু করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ হাসান রানা সহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের মাওলানা আব্দুল কবির দেওয়াল তুলে রাস্তাটি দীর্ঘ ২২টি বছর যাবৎ ভোগদখল করে। এতে আমাদের এলাকাবাসীর হাঁটাচলা, কৃষি কাজের জন্য ব্যবহারিত ট্রাক্টর সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নেয়া আনা করতে পারতাম না। এরপরে এলাকাবাসী সবাই মিলে স্থানীয় ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের জানাই এবং রাজাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সত্যতা যাচাই করে গত ২৫ জুলাই’২৩ তারিখে ততকালীন এসিল্যান্ড ফারজানা ববি মিতু এক সপ্তাহের মধ্যে ৮৩১ নং দাগের জমির ওপরের দেওয়াল উচ্ছেদ করার নোটিশ দেন। তিনি ও সারবেয়ার সরজমিনে এসে জমি মেপে আমাদের বুঝিয়ে দেন। মাওলানা আব্দুল কবির নোটিশের তোয়াক্কা না করে বিজ্ঞ আদালতে ৮২৬ নং দাগে নিজের সম্পত্তি দাবি করে মামলা দায়ের করলে আদালত উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আমরা ভূমি অফিসের দেওয়া উচ্ছেদ নোটিশ আদালতে পেশ করলে মহামান্য আদালত আব্দুল কবিরের পক্ষে দেয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়। কারণ কবিরের মামলায় দাগ নং ৮২৬ আর ভূমি অফিসের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা নোটিশে দাগ নং ৮৩১। তারপরেও আব্দুল কবির জমিটা তার দখলে রেখে দেয়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাস্তাটি পরিমাপ করে সিমানায় পিলার বসিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুল কবির বলেন, এই সম্পত্তি আমাদের। এখানে একটি মহল তাদের পেশি শক্তির জোরে আমাদের সম্পত্তিতে পিলার বসিয়েছে। তিনি ৮২৬ নং দাগে মামলা দায়ের করেন বর্তমানে মামলা চলমান আছে। তবে ওই সম্পত্তি ৮৩১ নং দাগের কিন্তু তিনি ৮২৬ নং দাগে মামলা দায়ের করেছেন। তাহলে ওই জমি তার দাগের না থাকার পরেও তিনি কেন দখল করে রাখছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ৮৩১ নং দাগে সম্পত্তি ভুল বসত বেশি রেকর্ড হয়েছে। ওই দাগে এতো সম্পত্তি না।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আসলাম হোসেন লিটু জানান, এই জমি ইউনিয়ন পরিষদের ৩৮৬ নং দাগের ২২ ফুট সম্পত্তি (হালট) সাধারণ জনগণের রাস্তার প্রয়োজনে পরিমাপ করে পিলার স্থাপন করা হয়েছে। কবির মাওলানার ঐ দাগে কোন জায়গা নেই। তিনি জবরদখল করে দেওয়াল করে নিছে।
এবিষয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে কথা হয় ওই সময়ের রাজাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ববি মিতুর সাথে তিনি জানান, মনিরুজ্জামান মধু, মাহমুদ হাসান রানাসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ দিলে উভয় পক্ষের কাগজ পত্র দেখে সরজমিন পরিদর্শন করে ৮৩১ নং দাগের জমি সরকারি হওয়ায় কবির মোল্লাকে উচ্ছেদ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর কি হয়েছে তা তিনি জানেন না।