বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির নলছিটিতে কুশঙ্গল নিকারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন এর বিরুদ্ধে ঘূর্নিঝড় রেমালে বরাদ্দকৃত টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ২৬ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এতে নিকাড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির দেওয়ালের কিছু অংশে গাছ পড়ে সীমানা প্রাচীরের এক পাশের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। তবে আবেদনে স্কুল কতৃপক্ষ থেকে দেখানো হয় সীমানা প্রাচীরের দেওয়ালে গাছ পড়ে ভেঙে গেছে এবং পুরাতন ভবনের উপর গাছ পড়ে ক্ষতি হয়েছে। যার মেরামত বাবদ স্কুলেটিকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহয়তা প্রদান করে সরকার।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সরকার কতৃক নতুন ভবন দেয়ায় পুরাতন ভবনটি অনেক আগে থেকেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেখানে কোন কার্যক্রম পরিচালনা হয়না। এবং পুরাতন ভবনে গাছ পড়ে ক্ষতি হওয়ার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। তবে ঘূর্নিঝড় রেমালের ৮ মাস পার হলেও স্কুলের সীমানা প্রাচীরের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ মেরামত করেনি কতৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অনিতা রানী দত্ত এর যোগসাজশে কাজ না করেই বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমন ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
মো. সোহেল নামে স্থানীয় এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম সপ্তাহে দুই তিনদিন নামমাত্র কিছু সময়ের জন্য স্কুলে আসেন। সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে আবার চলে যায়। স্কুলে পড়ালেখার কোন শৃঙ্খলা নেই। সকল শিক্ষকেরা ১১ টার পরে স্কুলে আসেন। তাই এই এলাকার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে পার্শবর্তী বাকেরগঞ্জ থানার স্কুলে নিয়ে লেখাপড়া করান। এবং ঘূর্ণিঝড় রেমালে ভাঙা সীমানা প্রাচীরগুলো সেভাবেই পড়ে আছে। কোন মেরামতের কাজ হয়নি।
মো. আসলাম শিকদার নামে স্থানীয় আরো এক বাসিন্দার জানান, ঘূর্ণিঝড়ে গাছ পড়ে সীমানা প্রাচীর ক্ষতি হয়েছে। তবে মেরামতের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সেটা আমরা শুনিনাই। তবে কোন কাজ করা হয়নি। আর কাজ করলে তো আমরা সবাই জানতাম।
এ বিষয় জানতে চাইলে কুশঙ্গল নিকারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন বলেন, আমার ভাই উপসচিব, বেশি ঘাটাঘাটি করলে চাঁদাবাজি মামলা করবো। এগুলো নিয়ে নিউজ হলেও আমার কিছুই হবেনা।
জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল ২০২৩ ইং বিদ্যালয়ের মেরামত ও শিক্ষার গুনগতমান উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেনকে কারন দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করে উপজেলা শিক্ষা অফিস। অভিযোগের বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষক সেলিম একজন সহকারী শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ন আচরন করেন। এছাড়াও বিগত দিনে প্রধান শিক্ষক সেলিমের বিরুদ্ধে অসংখ্য দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার অনিতা রানী দত্ত বলেন, সীমানা প্রাচীর ও পুরাতন ভবনের মেরামত না হলেও সরকারি নিয়ম মেনে এই বরাদ্দের টাকা দিয়ে ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে অন্য কাজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আ. ব. ম আসাদুল আলম বলেন, ঘটনার সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।