সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠিতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের সই জাল করে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান ওরফে মিলনসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঝালকাঠি সদর থানায় মাসুদ সিকদার নামের যুবলীগের এক কর্মী মামলাটি করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মিলন হাওলাদার (৩৬), তরিকুল ইসলাম (৩০), মো. মনিরুজ্জামান (৩৮), শাখাওয়াত হোসেন (৩৬), মো. মরিয়াজ হাওলাদার (৩৫), আল আরাফাত (২৩), আসাদুজ্জামান তালুকদার (৪০), আলীম আল রজিব (৪০), মাহমুদুল সাগর (২৫), মোহাম্মদ রনি হাওলাদার (৩৫), বশির আহম্মেদ খলিফাসহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জন। আসামিদের অধিকাংশই জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক নেতা-কর্মী।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, আসামিরা কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খানের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জেলা যুবলীগের ২২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির তালিকা তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ৬ সেপ্টেম্বর শহরের ডাক্তার পট্টি এলাকায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ হাদিসুর রহমানসহ আসামিরা বাদীকে মারধর করেন। স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি বাদী জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম ও যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল শরীফকে জানালে তাঁরা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এ ধরনের কোনো কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়নি।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩ সেপ্টেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির একটি তালিকা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহ্বায়ক করা হয় জেলা যুবলীগের বর্তমান আহ্বায়ক রেজাউল করিমকে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমানকে। যদিও বর্তমানে এ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন মো. কামাল শরীফ। পরে এ নিয়ে শহরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ শহরে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগে সৈয়দ হাদিসুর রহমানের অনুসারী আটজনকে আটক করে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুবলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কমিটি ছড়ানো হয়েছে, সেটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সেগুলোর সবই ভিত্তিহীন। কোনো কুচক্রী মহল আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার নোংরা খেলায় মেতেছে। তাঁদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।