মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন

কাঠালিয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পানের বরজে বিষ প্রয়োগ, আদালতে মামলা

কাঠালিয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পানের বরজে বিষ প্রয়োগ, আদালতে মামলা

বার্তা ডেস্ক:

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের পানের বরজে বিষ প্রয়োগ করে সাজানো ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কৈখালী গ্রামে রতের মোড় নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ৫দিন পর প্রতিপক্ষ আঃ রব হাওলাদরের ছেলে আউয়াল, সুজন ও তার দুই পুত্রবধূসহ ৫জনের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি আদালতে বিষ প্রয়োগে পানের বরজের ক্ষতিসাধন ও চাঁদাবাজী অভিযোগে মামলা করা হয়।

জানাযায়, উপজেলা দক্ষিণ কৈখালী গ্রামের মৃত আঃ রব হাওলাদার ও আঃ মালেক হাওলাদারের গংদের মধ্যে ৩২ শতাংশ বিরোধীয় জমি নিয়ে দীর্ঘ ২০১১ সন থেকে বিরোধ ও আদলাতে মামলা চলে আসছিলো। উক্ত মামলায় ২০১৪ সনে আদালতের রায় পেয়ে সম্পতি দখলে যান আঃ রব হাওলাদার। কিন্তু দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে থাকা জমির মায়া ছাড়তে নারাজ আঃ মালেক ও তার ছেলেরা। এরপর শুরু একের পর এক মামলা-মকদ্দমা ও শালিশ বৈঠক। সর্বশেষ গত বছরে ১৯ আগস্ট এ বিরোধীয় জমি দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের একাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত এবং পাল্টা মামলা হয়। পরে পক্ষদ্বয়ের সম্মতি এবং থানার মধ্যস্ততায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিস মনোনীত করা হয়। এ শালিসগণ একাধিক বৈঠক শেষে চুড়ান্ত রায় প্রক্রীয়াধীন।

সুজন হাওলাদার (মামলায় অভিযুক্ত) জানায়, সালিশীর রায়ে হেরে যাওয়ার ভয়ে আঃ মালেকের ছেলে রুবেল হাওলাদার (৩০) গভীর রাতে তার নিজের পানের বরজে বিষ প্রয়োগের মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করে। পূর্বের পরিচর্যাহীন বরজে শুধু পান পাতায় স্প্রে দিয়ে পান নষ্ট করে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা করছে।

আঃ রব হাওলাদরের ছেলে মোঃ আউযাল হাওলাদার (মালায় অভিযুক্ত) জানান, আঃ মালেক ও ছেলেরা আমাদের বিরুদ্ধে একর পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে অনেক ক্ষতি ও হয়রাণী করে আসছে। এখন সালিশি চুড়ান্ত পর্যায়ে এরই মধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে গত ১৩ এপ্রিল পানের বরজে বিষ ও চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে চারদিন পর গত ১৭ এপ্রিল আবার আরেকটা মামলা করেছে মালেকের ছেলে রুবেল। পানের বরজে বিষ ও একলাখ টাকা চাঁদাবাজী ঘটনার খবর এলাকাল কেউ জানে না ও শুনেন নাই।

মাললার স্বাক্ষী আঃ বরকত হোসেন সিপাই বলেন, যখন পানের বরজে ওষুধ দেওয়া হয়েছে তখন কেউ ধরা পরে নাই। তিন/চার দিন পরে সব শুকাইয়া গেছে। যখন ওষুধ দেওয়া হয়েছে তখন কিছুই আলাপ পাই নায়। ঘটনার ৩/৪ দিন পর আমাকে বলছে।

অপর স্বাক্ষী সাবেক ইউপি সদস্য রত্তন আলী হাওলাদার বলেন, কয়েকদিন আগে আঃ মালেক আমাকে বলছে যে আমার পানের বরজে ওষুধ দিয়ে নষ্ট করেছে। আমি ঘটনাস্থলে যাই নাই এবং দেখিও নাই। রোজা রেখে আমি অন্যের বিরুদ্ধে কেন মিথ্যা কথা বলবো।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আঃ জব্বার হাওলাদার (পীর সাহেব) বলেন- ঘটনা যখন ঘটেছে তখন কিছু শুনি নাই। তবে ৩/৪ পরে শুনছি যে পানের বরজে নাকি বিষ দেওয়া হইছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জালাল মুন্সী বলেন, জমির মালিক আউয়াল ভাই ওখানে থাকতেন। অনেক দিন থেকে সেও ওখানে থাকে না । তিনি তার ভাইর বাসায় থাকেন। পানের বরজে বিষ দেওয়ার কথা ৩/৪ দিন পর রুবেলের কাছে শুনেছি। যদি সত্যি ঘটনা হতো তাহলে অবশ্যই আসে পাশের ২/৪ জনে জানতো। তবে অনেক দিন জমি নিয়ে বিরোধের কারণে পানের খেত পরে ছিলো। পানের খেত আগেরই নষ্ট ছিলো।

মামলার বাদী মোঃ রুবেল হাওলাদার বলেন- আমি প্রতিদিন রাইতে পানের বরজে যাই। ওই দিন দেখি পানের বরজে লাইটের আলো দেখা যায় ও একটু কুন কুন শব্দ। তখন আমি বাসায় এসে আব্বাকে উঠাইছি। আব্বাকে ও মাকে নিয়ে বরজের পাশে গিয়ে দেখি ভিতরে লোকজন ও লাইটের আলো। দুই মহিলা সাইটে ঘুড়তে আছে ও ভিতরে তিন জন পুরুষ বিষ দিতে দিতে সামনের দিকে যাচ্ছে। আমাদের কথা আলাপ পেরে সামনে থেকে নেট জাল উঠিয়ে তারা বের হয়ে গেছে। তাদেরকে আমি টর্চ লাইটের আলোতে দেখতে পেরেছি। বিষ দেওয়ার পর আমি থানায় গেছি তারা বলছে যে কোটে মামলা আছে আপনি কোটে মামলা দেন।

শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, পানের বরজে বিষ ও চাদাবাজি অভিযোগের মামলাটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার জন্য এটা করা হয়েছে।

কাঠালিয়া থানার ওসি মোঃ মুরাদ আলী জানান, মামলার কাগজ হাতে না পেয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ 01774937755 অথবা ই-মেইল: kathaliabarta.com












All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana