মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন
সাকিবুজ্জামানসবুর:
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার ৮৩নং পশ্চিম আনইলবুনিয়া কিশোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণী কক্ষে। ফাটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন দেয়ল ও পিলারে। প্রায় সময় বিদ্যালয়ের পলেস্তারার টুকরো পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় পুরো ছাদ কিংবা ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে শ্রেণীর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কয়েক ধাপে ভবনটির ছাদ, পিলার ও দেলায় মেরামত করা হলেও কোন লাভ হয়নি।
সরেজমিন পরিদর্শন ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, ১৯৭১ সালে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নরে আনইলবুনিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে চারটি কক্ষ ব্যবহৃত হয় প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের কক্ষ এবং শ্রেণি কক্ষ হিসেবে। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে এবং সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণী কক্ষে। ভবনের বিভিন্ন দেয়ল ও পিলারে ফাটল ধরলে ও পলেস্তারা ধসে পড়লে কয়েক ধাপে মেরামত করা হলেও কোন কাজে আসেনি। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সব সময় আতঙ্কে থাকেন।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার জানায়, পুরোনো ভবনের কক্ষে তাদের ক্লাস করতে হয়। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়, কখন মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ে। বৃষ্টির সময় শ্রেণি কক্ষের মধ্যেও পানি চলে আসে তাই ক্লাস করা যায় না। এতে লেখা পড়ার অনিক ক্ষতি হয়।
অপর এক শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার জানায়, আমাদের বিদ্যালয়টি খুবই পুরানো হয়ে গেছে। অনেক জায়গা থেকে ফাটল ধরেছে এবং ভেঙ্গে পড়ছে। বাহিরে থেকে বৃষ্টি হলেই ক্লাসে পানি ঢুকে পড়ে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. রুহুল আমিন খান বলেন, বিদ্যালয়ের এই ভবনটি ১৯৯৫ সালে তৈল করা হয়েছে। এখন অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ। ভেঙ্গে যাওয়ায় দেয়াল ও পিলার কয়েকবার মেরামত করা হয়েছে। বর্ষার সময় সব রুমের ছাদ থেকে পানি পড়ে। শিশুদের রুমের বাহিরে বসে ক্লাস নিতে হয়। এছাড়া পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই, যা আছে তাও ভাঙ্গা। কোন মতে মেরামত করে শিক্ষার্থীদের বসতে দিতে হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। গত বছরও ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানের ফাটল ও ভাঙ্গা অংশ মেরামত করেছি। ছাদ থেকে পানি পড়ার কারণে ছাদে নতুন করে ঢালাইয়ের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া ভবনের সামনের পিলারের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে গেছিলো সেই সব মেরামত করেছি। ভবনটি ২০১৮ সালে ঝুকিপূর্ণ ঘোষনা করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ নতুন ভবন দেওয়ার জন্য সয়েল টেষ্ট করে গেলেও করোনার কারণে এখন পর্যন্ত নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। আমরা চাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য খুব দ্রæত যাতে নতুন একটি ভবন নির্মান করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) জানান, বিদ্যালয়টি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় নতুন ভবন নির্মানের জন্য সয়েল টেষ্ট করা হয়েছে। করোনার কারণে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে সমস্যা হয়েছে। খুব দ্রæত নতুন ভবন নির্মাণ হবে।