সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫২ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা:
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত, বাড়িঘর, গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে, বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ, কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দক্ষিন চেঁচরী, বাঁশবুনিয়া, বড় কাঠালিয়া ও কচুয়া গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে বসত ঘর ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। গাছ উপড়ে পড়ে বহু ঘর গাছের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের নয়টি খুঁটি ভেঙে ও হেলে গিয়ে তিন কিলোমিটার বিদ্যুৎলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কচুয়া ফিডের গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
পশ্চিম আউরা গ্রামের কৃষক মো. নুরনবী তালুকদার বলেন, টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে রোপা আমন ধান মাটিতে পড়ে পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এতে ধানে চিটা হওয়াসহ বড় রকমের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছ।
দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামের কৃষক মো. ছায়েদ আলী ফকির বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমার আমন ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঝালকাঠিতে চলতি বছর ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে। ঝড়ে অধিকাংশ জমির রোপা আপন ধান লুটিয়ে পড়েছে। এছাড়া, সবজি, পানের বরজ ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে যেসব বীজের মাথায় ধান এসেছে, সেগুলো শুয়ে পড়তে পারে। কিন্তু এখনো বেশির ভাগ ধানে থোর পর্যন্ত হয়েছে। মাথায় ভার না হওয়ায় সেগুলো শুয়ে পড়বে না।
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় “মিধিলি”র প্রভাবে ঝালকাঠিতে প্রবল বর্ষন
শীতকালীন সবজির বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব স্থানে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়। সেই ক্ষেতগুলো সজ্জন বা কাঁদি পদ্ধতিতে। এজন্য পানি জমতে না পারায় কৃষকের ক্ষতির আশঙ্কাও কম।
কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ ইমরান বিন ইসলাম বলেন, তাদের ৭শ হেক্টর খেসারী, পাঁচশত হেক্টর পাকা উপসী আমল, ২শ হেক্টর দুধকলম ধান, পাঁচশত হেক্টর কলাবাগান ও পাঁচ শত হেক্টর শাক-সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নেছার উদ্দীন বলেন, উপজেলায় বেশকিছু গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া আমনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ ফসলি জমিও নিমজ্জিত রয়েছে পানিতে। বেশকিছু এলাকায় আধাপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। এছাড়া, সবজি, পানের বরজ ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে কাঁচা পাকা বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়াসহ অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।