বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নে দক্ষিন চেঁচরী গ্রামের দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধুকে ধর্ষন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মো. আলমগীর হোসেন (৪০) নামে এক পুলিশের উপপরিদর্শককে (এসআই) কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরী পরিসেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ঘটনাটি অবহিত করেন ঐ নারী। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আলমগীরকে খুঁজে পায়নি। অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত আছেন।
স্থানীয়রা জানায়, তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহিন হাওলাদার জানান, তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাথে ভুক্তভুগী ওই নারীর ভগ্নিপতির একটি চায়ের দোকান আছে। সেই দোকানে পুলিশ সদস্যরা আড্ডা দিত। বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসার সুবাধে চায়ের দোকানে প্রায়ই বসত সেই নারী। এসআই আলমগীরের সাথে সেখানেই পরিচয় হয়। এসআই আলমগীর সোমবার রাতে সেই নারীর বোনের বাড়িতে প্রবেশ করে তাঁকে ধর্ষণ করায় ওই নারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে এসআই আলমগীরকে কুপিয়ে জখম করেন।
চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামের ইউপি সদস্য মো. শাহীন খান ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান, গত সোমবার রাতে এ রকমের একটি ঘটনা ঘটেছে আমি শুনেছি। তবে আমি ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলাম না।
এ ব্যাপারে ভিকটিম গৃহবধু ওই নারী কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন আমার ঘরে এসে আমাকে একা পেয়ে ধর্ষন করে। এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা দেয় ফলে বর্তমানে আমার সমস্ত শরীর ব্যাথা করে। সে চলে যাওয়ার সময় আমার মোবাইল ফোন, ঘর থেকে ৭ বড়ি সোনা ও ছয়শত টাকা নিয়ে যায়। এসময় আমি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেনকে আমার ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় দাও দিয়ে তার পায়ে তিনটি কোপ দিয়ে জখম করেছি। পরে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে থানার ওসি সাহের এসে আমাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন কিন্তু ঘটনার দু’দিন হলেও কোন বিচার পাইনি। ঘঁটনার পর থেকে আমাকে ও আমার ছেলে বিভিন্ন লোক দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পরে বলেন আমি ও আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ কি হবে। লজ্জায় সমাজে আমরা মুখ দেখাবো কিভাবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই আলমগীরের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমি এ ধরনের একটি ঘটনার কথা শুনেছি। ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম এবং এখন আমি কুষ্টিয়া যাচ্ছি। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি এসআই আলমগীর বর্তমানে তারাবুনিয়া তদন্ত কেন্দ্রে আছেন।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মুরাদ আলী বলেন, ঘটনাটি শুনিছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।