রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন

কাঠালিয়ায় একটি রাস্তার জন্য পানি ও কাঁদা ভেঙে যাতায়াত

কাঠালিয়ায় একটি রাস্তার জন্য পানি ও কাঁদা ভেঙে যাতায়াত

বার্তা ডেস্ক:

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের আমরবুনিয়া গ্রামের মায়ারাম এলাকার বাসিন্দাদের একটি রাস্তার জন্য দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে পানি ও কাঁদার সাথে চলছে জীবন যুদ্ধ। শীতের মৌসুম ব্যতিত বছরের ৮-৯ মাসই জোয়ারের সময় হাটু সমান পানি ও কাদা ভেঙ্গে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশার বানী থাকলেও যুগের পর যুগ অতিবাহিত হলেও বাস্তাটি নির্মানের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাস্তা নির্মিত না হওয়ায় ক্ষোভে ও কষ্টে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাস্তার উপর ধানের চারা রোপন করে ভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানায় স্থানীয়রা।

মায়ারাম এলাকার বাসিন্দা বাবু গনেশ চন্দ্র মিত্র ও অসিম চন্দ্র মিস্ত্রীসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আমরবুনিয়া গ্রামের মায়ারাম এলাকায় দীর্ঘ ৫০ বছরেও রাস্তা ঘাটসহ কোন প্রকার উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। গ্রামটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। রাস্তা বিহীন এ পথ দিয়ে প্রতিদিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী ও নারী শিশুসহ নানা শ্রেনি পেশার লোকজন যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের পথটিতে হাটু পানি ও কাঁদায় একাকার হয়ে থাকে। ফলে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা খুবই দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে। যুগযুগ ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষথেকে বিভিন্ন ভাবে প্রতিশ্রæতি দেয়া হলেও দীর্ঘ দিনেও দুর্ভোগের লাগব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রæত সময়ের মধ্যে একটি রাস্তা নির্মাণ করে জনদূর্ভোগ লাগব ও পানিবন্ধী থেকে মুক্ত করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।

আমরবুনিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিংকী মিস্ত্রী জানায়, কাঁদার জন্য আমাদের এই রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে খুবই সমস্যা হয়। জোয়ারের সময় রাস্তা পানিতে তলিয়ে থাকে। আমাদের এই রাস্তাটি খুবই প্রয়োজন।

আমরবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বিধান্ত চক্রবর্তী জানায়, এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে পারি না অনেক জল হয়। স্কুলে যাওয়ার সময় অনেকে কাঁদায় পড়ে গিয়ে আর স্কুলে যেতে পারে না।

মায়ারাম এলাকার কৃষক সংকর মিস্ত্রী জানায়, রাস্তা না থাকায় আমরা খুব ভোগান্তিতে রয়েছি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। কিছুদিন আগে আমার একটি গাভী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু ডাক্তারের কাছে নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় গাভীটি মারা যায়। আমাদের এই রাস্তাটি অত্যান্ত প্রয়োজন। সরকারের কাছে দাবি আমাদের রাস্তাটি নির্মাণ করে ভোগান্তি দূর করেন।

কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মোঃ ফয়সাল আহমেদ মিঠু জানান, মায়ারাম অংশটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। স্বাধীনতার পর থেকে এই অংশটি এভাবেই দেখছি। রাস্তা ঘাটের তেমন কোন উন্নয়ন নেই। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে অল্প কিছু যায়গায় ইট বিছানো হলেও জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। আমি আমার সাধ্যমত পুনরায় ইটগুলো বিছিয়ে দিলেও রাস্তাটির পুরো অংশই খারাপ। জোয়ারের পানিতে রাস্তাটি প্লাবিত হয়। লোকজন ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। কোন রোগী থাকলে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় না। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কলেজে যেতে পারে না। আমরা পরিষদের মাধ্যমে চেষ্টা করে যাচ্ছি এই এলাকার রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করার জন্য। আমি প্রথম বার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এর আগে কেন রাস্তাটি হয়নি বুঝতে পারছি না। তবে অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তাটি নিমার্ণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদার ওই এলাকার দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে রাস্তাটি নির্মান করাসহ উন্নয়নের আশ্বাস দেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana