রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
বার্তা ডেস্ক:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ার আমুয়া বন্দর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায় দিকে উপজেলার আমুয়া বন্দর বাজারে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে হয়েছে। এ অগ্নিকান্ডে আমুয়া বন্দর আমির মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি কাঠের ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ সময় মো. রিয়াজ খান (৪০), মো. সাগর মিয়া (৩০)সহ ৪জন উদ্ধার কর্মী আহত হয়। অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক কাঠালিয়া ও বামনা ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট পৌঁছে দু’ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের ধারনা নেছারের খাবার হোটেল থেকে আগুনের সুত্রপাত। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দাবি অগ্নিকান্ডে তাদের এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাজারের নৈশ প্রহরীরা বাজারে আগুন জ্বলতে দেখে ডাক চিৎকার দেয় এবং মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকার লোকজনকে জানান। প্রথমে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। মুহুর্তের মধ্যে আগুন আসে পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক কাঠালিয়া ও বামনা ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট দু’ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। ততক্ষনে জাকির গোলদারের ওষুধের ফার্মেসী, নেছারের হোটেল, সুমনের মুসলিম লাইব্রেরী, পলাশের বনানী কম্পিউটার সেন্টার, মাসুদের জুতার দোকান ও গোডাউন, শাহজাহানের মুদির দোকান, বাবুলের গামের্ন্টস ও জুতার দোকান সম্পূর্ণ ভস্মিভ‚ত হয়েছে।
অমুয়া বন্দর আমির মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান শহিদ গোলদার জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে পাহাড়াদারদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাজারে গিয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। পরে আমি গিয়ে সমজিদের মাইকের মাধ্যমে এলাকার লোকজনকে জানাই। এ অগ্নিকান্ডে বিদ্যালয়ের তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি কাঠের ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায় ও বিদ্যালয়ের মুল ভবনও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
আমুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় রায় জানান, রাতে আগুনের সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বাজারে গিয়ে দেখি অগুন জ্বলছে। তাৎক্ষনিক আমি ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, চেয়াম্যান ও ইউএনও স্যারকে ফোন দিয়ে জানিয়েছি। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রনের আনি। আগুনে ৭টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ হোটেল ব্যবসায়ী নেছার হাওলাদার কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, রাত ১১টার সময় আমি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে গিয়েছি। আগুনের খবর পেয়ে এসে দেখি দোকানের ৩টা ফ্রিজ, নগদ ৯৫ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার, বাড়ির দলিলপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের কাগজপত্র, দোকানের হিসাবের খাতা ও মালামাল সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ৭/৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আমুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন গোলদার জানান, রাত ১২টার দিকে বাজারের পাহাড়াদারের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাজারে গিয়ে দেখি ঔষুধের ফার্মেসীসহ আমার তিনটি দোকান পুড়ে গেছে। এছাড়া বাজারের আরো ৪টি দোকান পুড়ে যায়। এতে আমার ও বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কাঠালিয়া ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন মাস্টার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, রাত ১২ দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাই। পরে বামনা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আমাদের সাথে যোগ দেয়। দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছি। এতে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে ৩০/৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। নেছারের খাবার হোটেল থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারনা।