শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন
সাকিবুজ্জামান সবুর:
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার চান্দের হাট বাজার সংলগ্ন খালের ওপর আয়রন ব্রিজটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে অত্যন্ত নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সিমেন্টের ঢালাই বেশির ভাগই ভেঙে গেছে। ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ব্রিজটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী নিচে বাঁশ বেঁধে ব্রিজটির ওপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। তবে ব্রিজটি এখন এতোটাই নরবড়ে হয়ে গেছে ব্রিজের উপর দিয়ে কোন গাড়ি চলাচল করতে পারে না। কোন মতে ব্রিজটি দিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়। ব্রিজটি দিয়ে পারাপারের সময় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার আতংকে থাকেন। এছাড়া বিপাকে পড়ছেন অটোবাইক, মোটরসাইকেল, টেম্পো, রিকশা, ভ্যানসহ অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাহনের যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর থেকে দেড় যুগ আগে চান্দের হাট বাজার সংলগ্ন এ আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করে। বর্তমানে ওই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়েই প্রতিদিন কাঠালিয়া সদর, কৈখালী, বাঁশবুনিয়া, চেঁচরী রামপুর, আনইলবুনিয়া, দক্ষিণ কৈখালীসহ কয়েক গ্রামের শত শত মানুষ দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে চলাচল করছেন। ব্রীজটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের দুই পাশে বাশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে যাতে কোন গাড়ি ব্রিজে না উঠতে পারে। ব্রিজটি এতোটাই নরবড়ে গাড়ি উঠলেই ব্রিজটি ভেঙ্গে খালে পড়ে যেতে পারে। তাই দ্রæত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পাড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা দ্রæত ব্রীজ সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বিরেন মিস্ত্রী বলেন, ব্রিজটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ। ব্রিজটি অনেক পুরাতন তাই যেকোন সময় ভেঙ্গে খালে পড়ে যেতে পারে। মানুষজনদের চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় গাছ দিয়ে ব্রিজটি আটকে দেওয়া হয়েছে । খুব দ্রæত এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মান করা দরকার।
স্কুল শিক্ষার্থী রাব্বি হাসান জানান, ব্রিজটি অনেক পুরাতন একটি ব্রিজ। যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। ব্রিজটি দিয়ে মানুষ চলাচল করলেই ব্রিজটি নড়াচড়া করে। কোন গাড়ি চলাচল করতে পারে না। তাই এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মান করা খুব প্রয়োজন।
ব্রীজ পাড় হওয়ার সময় আলেয়া বেগম নামের এক পথচারী জানান, এই ব্রিজটি না থাকায় যাতায়াতে খুব ভোগান্তি হচ্ছে। রিকশা বা অটোগাড়ি কোন কিছুই চলাচল করতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে যাতায়াত করি। ভাঙাচোরা ব্রীজ পার হতে ভয় লেগে যায়। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যায়, তা হলে কে দায় নেবে।
স্কুল পড়ুয়া জসিম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা বীজ পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে যেতে হয়। ব্রিজে উঠলেই সব সময় আতংক কাজ কখন যেনো ভেঙ্গে পড়ে। তাই দ্রæত এ ব্রিজটি নিমার্ণের দাবী জানাই।
কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদার জানান, ব্রিজটি দিয়ে মানুষজন চলাচল করলেই নড়াচড়া করতো। তাই স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে একটা বরাদ্দ নিয়ে অ্যাঙ্গেলগুলো জালাইয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ব্রিজটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মান করা খুবই জরুরি। নতুন করে নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাদ জগলুল ফারুক জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি পুনর্র্নিমাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি।