শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
বরগুনার বামনা উপজেলার আমতলী গ্রামে এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পানির গ্লাস ভেঙ্গে কয়েক দফায় মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম সুদেব হাওলাদার(৩৫)। সে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন আমতলী গ্রামের জীতেন্দ্রনাথ হাওলাদারের ছোট ছেলে । ভুক্তভোগি ওই কর্মকর্তা বর্তমানে কাঠালিয়া কৃষি অফিসে কর্মরত আছেন। তার বাড়ি বামনা উপজেলার সদরের আমতলী গ্রামে।
এদিকে বামনা থানায় মামলা দায়ের করার পক্ষকাল অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত প্রধান আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় আমতলী ও রুহিতা গ্রামের জনগন দ্রুত তাকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছে।
আজ মঙ্গলবার(২৯ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় আমতলী গ্রামের রুহিতা আমতলী সফিপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের(আখড়াবাড়ি) সম্মুখ সড়কে প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মানববন্ধনে দুই গ্রামের প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, হামলায় গুরুতর আহত কৃষি কর্মকর্তার বাবা অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার, রুহিতা আমতলী সফিপুর হিন্দু কল্যান নবারুন সংঘের সভাপতি নির্ঝর কান্তি বিশ^াস ননী, সাধারণ সম্পাদক রনজিত হাওলাদার, ভুক্তভোগীর স্ত্রী শিপ্রা রানী, প্রতিবেশী সঞ্জীতা রানী, সমাজসেবক মো. রনি খান, মনোতোষ হাওলাদার, তাপস বেপারী প্রমূখ। মানববন্ধনে আগত সকলের দাবী আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।
জানাগেছে, অভিযুক্ত সুদেব হাওলাদার কৃষি কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টা করার পরে উল্টো একজন সাংবাদিকসহ গ্রামের কয়েকজন যুবকের নামে বরগুনা আদালতে মিথ্যা চাদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ সমাবেশে অভিযুক্তের শাস্তির দাবী তোলেন।
গ্রামবাসীরা মানববন্ধনে জানান, সদ্য সমাপ্ত হওয়া শারদীয় দূর্গা উৎসবের উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অভিযুক্ত সুদেব হাওলাদার। সে পূজা শুরুর পূর্বে কৃষি কর্মকর্তা অনুপম হাওলাদারে নিকট থেকে প্রতিমা তৈরীর উপকরণ ক্রয়ের জন্য কিছু টাকা ধার নেয়। পূজা শেষে গত ১২ অক্টোবর দুপুরে ওই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সুদেব হাওলাদার ক্ষিপ্ত হয়ে মন্দিরের সামনের সড়কে একটি চায়ের দোকানে বসে প্রকাশ্যে পানির গ্লাস ভেঙ্গে ওই কৃষি কর্মকর্তার মাথায় কয়েক দফা আঘাত করে। এতে তার মাথার কয়েক স্থানে ফেটে ও গুরুতর কাটা জখম হয়। পরে ওই কর্মকর্তার স্ত্রী সুদেব হাওলাদারসহ ৪ জনের নামে বামনা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। ওই মামলা দায়ের করার পরে অভিযুক্ত আসামী বরগুনা আদালতে উল্টো আহত কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বামনা হাসপাতালের ল্যাব এটেন্ডেন্টসহ ৭জনকে আসামী করে একটি মিথ্যা চাদাবাজী মামলা দায়ের করেন।
গ্রামবাসীরা আরো জানান, এই সুদেব হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিগত দিনে আরো ৪ জনের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি স্বর্ন ব্যবসার আড়ালে গ্রামে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে।
এ ব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ মো, হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, গত ১২ অক্টোবর দুপুরে আখড়াবাড়ি মন্দিরের সামনে ঘটনাটি ঘটার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। রাতে মামলা নিয়ে একজন আসামীকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠাই। মামলার ৪জন আসামীর মধ্যে ৩জন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। প্রধান আসামী বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।