শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন

করোনা শনাক্তের হারে বাংলাদেশ এশিয়ায় শীর্ষে

করোনা শনাক্তের হারে বাংলাদেশ এশিয়ায় শীর্ষে

অনলাইন ডেস্ক:

করোনাভাইরাসের দৈনিক শনাক্তের হারে এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এ তথ্য উঠে এসেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশনের (সিআরআইডিএ) বিশ্লেষণে ।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সূচক বেশি হওয়ায় এবং দৈনিক শনাক্তের হার ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় আগামী দিনগুলোতে শনাক্ত এবং মৃত্যুহার আরও বেড়ে যাওয়ার আশংকা করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইডিএ।

সংস্থার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গত ১৫ দিনে বাংলাদেশে দৈনিক শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় ২ গুণেরও বেশি। গত ২৬ জুন দেশে দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ১৫.৭ শতাংশ, ১২ জুলাই সেটি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২৪ শতাংশে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ১৩ জুন থেকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সূচক (রিপ্রোডাকশন রেট) এদেশে ১.৩ এর বেশি- অর্থাৎ গত এক মাস ধরে সংক্রমণ প্রতি ১০০০ জন থেকে ১৩০০ জনে ছড়িয়ে পড়েছে।

সিআরআইডিএ জানায়, করোনা সংক্রমণের দৈনিক শনাক্তের হার বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং এশিয়াতে প্রথম। গত ৭ জুলাই বিশ্বের মধ্যে নামিবিয়া, মেক্সিকো এবং তিউনিশিয়ার পরেই ছিল বাংলাদেশের অবস্থান।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর প্রতি ১০০ জনের ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। অথচ এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুর সময় হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার ছিল ৫ শতাংশ। সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর। তবে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আজ মঙ্গলবার সিআরআইডিএ-র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার রোজেন তাদের বিশ্লেষণ ও প্রাপ্ত ফলাফল বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ টেস্ট না করার কারণে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিয়ে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্রটি বোঝা যায় না। যেসব দেশে টেস্ট কম হয় সেসব দেশের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য উপযুক্ত সূচক হলো ‘শনাক্তের হার’ এবং ‘রিপ্রোডাকশন রেট’।

গত ২৩ জুন ও ৪ জুলাইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সারা দেশেই আইসিইউ শয্যায় ভর্তি করা রোগীর সংখ্যা ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আরও বেড়ে গিয়ে ১১ জুলাই ৭৬ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ নতুন আক্রান্ত রোগীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাকেই মারাত্মক কোভিডজনিত জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

১১ জুলাইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে সিআরআইডিএ জানায়, অতি উচ্চ সংক্রমণের কারণে দেশে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছে এবং সারা দেশে ১১ হাজারেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গত এপ্রিলে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় দিনে সক্রিয় করোনা রোগী ছিল প্রায় ১ লাখ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার হার বেড়েছে।

এবিষয়ে সিআরআইডিএ’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার রোজেন বলেন, লকডাউন একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধান। আর মহামারি নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী সমাধান হলো টিকা। পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে টিকা ও ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকা জয়ী হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা মহামারির ভয়াবহ সংক্রমণের মূল কারণ হচ্ছে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট (অধিক সংক্রমণশীল) থেকেও কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রামক এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। তবে কিছুটা স্বস্তির বিষয় হলো, অধিকাংশ ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে কার্যকর। ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থতা বা করোনাজনিত মৃত্যু থেকে প্রায় শতভাগ সুরক্ষা দেয় বলে জানান তিনি।

ডা. শাহরিয়ার রোজেন আরও জানান, ফাইজারের ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গুরুতর অসুস্থতা থেকে ৯৬ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। মডার্না, সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন সম্পর্কে গবেষণার ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মডার্না, সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন করোনাজনিত গুরুতর অসুস্থতা থেকে প্রতিরক্ষা দেবে।

 

সূত্র: দেশ

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ 01774937755 অথবা ই-মেইল: kathaliabarta.com












All rights reserved@KathaliaBarta 2016-2025
Design By Rana