মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন

কম্পিউটার মনিটরের কেজি ৫০ টাকা, সিপিইউ ৪১

কম্পিউটার মনিটরের কেজি ৫০ টাকা, সিপিইউ ৪১

অনলাইন ডেস্ক:

বিধিসম্মত অনুমতি না নিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পুরোনো জিনিস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া ভাঙাড়ি টিনের দামে কম্পিউটার সরঞ্জাম বিক্রির অভিযোগও উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টিপু সুলতান ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির ঠিক আগে ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত চার কর্মকর্তাকে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোররুম থেকে ৫০ টাকা দরে ৪৩টি কম্পিউটারের পুরোনো মনিটর বিক্রি করেছেন এস্টেট দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান টিপু সুলতান। ভাঙাড়ি টিনের দরে (৪১ টাকা কেজি দরে) ৪৩টি সিপিইউ, একটি পুরাতন টাইপিং মেশিন, প্রিন্টার, তিনটি ফটোকপি মেশিন এবং গড়পরতা দামে একটি পুরোনো এসি, ২৩ কেজি ওজনের ছয়টি লোহার পাইপ ও প্রায় সাড়ে চারশ কেজি পুরোনো কাগজ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।

জিনিসগুলো প্রায় ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এ সময় দপ্তরটির সহকারী রেজিস্ট্রার বকুল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাজমুল হোসাইন সাবু, কর্মকর্তা সমিতির সদস্য উকিল উদ্দিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিক্রির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি- এমন অভিযোগও উঠেছে।

প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে সরঞ্জাম বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিলাম কমিটির এস্টেট দপ্তরের প্রতিনিধি উপ-রেজিস্ট্রার গোলাম মাহফুজ মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোররুম থেকে যে কোনো সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রে প্রথমে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে উপাচার্যের অনুমতি নিতে হয়। পরে নিলাম ও বিক্রয় কমিটির মাধ্যমে এগুলো বিক্রি হয়। এ ক্ষেত্রে অনেক নিয়মকানুন মানতে হয়। বিক্রির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা করতে হয়। তার পর গেট পাসের মাধ্যমে মালপত্রগুলো ক্যাম্পাস থেকে বের হয়। কিন্তু এই জিনিসগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো প্রকার নিয়ম মানা হয়নি। ভাঙাড়ির দরে বিক্রি করে গেট পাস দিয়ে বের করে দিয়েছে। টাকাও সমন্বয় করেনি।’
টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে অতীতেও জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা বেশি মূল্যে ক্রয় এবং অফিসের জিনিসপত্র ক্রয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। তা ছাড়া তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আছে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছের হওয়ায় বারবার দুর্নীতি করেও টিপু সুলতান পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তা সমিতির নেতারা। বিষয়গুলো নিয়ে অভিযুক্ত টিপু সুলতান সাংবাদিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

এ বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এ টি এম এমদাদুল আলম বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী এ ধরনের অনিয়মে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। কর্মকর্তা সমিতি কোনো প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না।’

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে স্টোরের জিনিসপত্র বিক্রির কারণ জানতে চেয়ে টিপু সুলতান, বকুল, সাবু ও উকিলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম এ বিষয়ে বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর তাঁদের কাছে লিখিত বক্তব্য জানতে চেয়েছি। লিখিত বক্তব্য পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। তাঁরা যদি অনুমতি না নিয়ে থাকে, তবে অবশ্যই অপরাধ করেছে।’

সূত্র: সমকাল

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana