সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির নলছিটির একটি পৌরসভা ও দশটি ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র ভরসা নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যেটিতে দীর্ঘদিন ধরেই নেই সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার ওষুধ (অ্যান্টিভেনাম) এছাড়া শেষ হয়ে গেছে জলাতঙ্কের টিকা। বাধ্য হয়ে এসব রোগীদের ছুটতে হচ্ছে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শেরেই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব রোগীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন।
নলছিটি উপজেলার এটি ৫০ শয্যার হাসপাতাল। এ উপজেলা থেকে জেলা সদরে আসতে নৌপথ ব্যবহার করতে হয়। দিনের বেলা ভোগান্তি নিয়ে রোগী আনা-নেওয়া করা হলেও রাতের বেলায় জেলা সদরে আসার কোনো ব্যবস্থা নেই। নলছিটি থেকে বরিশালের দূরত্ব বেশি হওয়ায় সেখানে যেতেও অনেক খরচ ও সময় লেগে যায়। এতে উপজেলার মানুষ চরম ঝুঁকিতে আছেন। বিশেষ করে সাপে কাটা রোগীর ঝুঁকি অনেক বেশি।
পৌর শহররে বাসিন্দা শাকিল হোসেন জানান, নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘদিন ধরে জলাতঙ্করোধী প্রতিষেধকের সরবরাহ নেই। কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। হাসপাতালটিতে জলাতঙ্করোধী টিকার সহজলভ্যতার বিষয়টি খুবই জরুরি। কিন্তু কুকুর কামড়ানো রোগীরা নলছিটি হাসপাতালে গিয়ে টিকা পাচ্ছে না। ফলে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে বা বাইরে থেকে চড়া দামে টিকা কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
আরও পড়ুন : জাতিসংঘ যে বার্তা দিল বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে
নলছিটির কুলকাঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা রিমা আক্তার জানান, কিছুদিন আগে আমার মেয়েকে কুকুরে কামড় দিয়েছিল নলছিটি হাসপাতালে এসে এর টিকা দিতে পারিনি। আমাকে বাহির থেকে কিনে দিতে হয়েছে। এই হাসপাতালটিতে জলাতঙ্কের টিকা দ্রুত আনার প্রয়োজন।
সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা শিক্ষানবিশ আইনজীবী ইমাম হোসেন জানান, নলছিটি হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার ওষুধ (অ্যান্টিভেনাম) নেই। বাধ্য হয়ে রোগীদের বরিশাল যেতে হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসা হওয়াটা অতি জরুরি। বরিশাল যেতে অনেক সময়ও লাগে ততক্ষণে ওই রোগী মারা যেতে পারে। তাছাড়া অনেকে বরিশালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য থাকে না।
নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
কর্মকর্তা ডা.শিউলী পারভীন বলেন,অল্প কিছুদিন হয়েছে কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড়েরর প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) শেষ হয়েছে।নতুন চাহিদাপত্র প্রস্তুত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত নলছিটিতে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সহজলভ্য হবে।
আর নলছিটিতে খুব বেশি সাপে কাটা রোগী আসে না।যারা আসে তাদের মধ্যে বিষাক্ত নয় এমন সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাই বেশি। সেক্ষেত্রে আমরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখি, পরে সুস্থ হলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। আমাদের যদি সন্দেহ হয় এটা বিষাক্ত সাপের কামড় সেক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেরেই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা.এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, জেলা সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ইনজেকশন থাকার কথা। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব। নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার ওষুধ (অ্যান্টিভেনাম) থাকার কথা না আর জলাতঙ্কের টিকা না থাকলে আনানোর ব্যবস্থা করব।