বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় ৭নং চেঁচরী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. জাকিয়া বেগমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও ড্রেস কেনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ৪৯জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৩জন শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্ধকৃত সমূদয় টাকা সুকৌশলে তিনি উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ফেরত এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তোভোগী অভিভাবকরা।
জামাল খান, মো. মাছুম, মো. সেলিমসহ অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন, ২০২১সনের উপবৃত্তির টাকা প্রাপিÍর জন্য নগদ একাউন্ট খোলতে আমাদের (অভিভাবকদের) কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক জাকিয়া বেগম জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, ছবি ও মোবাইল নম্বর নেন এবং তিনি নিজেই স্কুলের ৪৯জন শিক্ষার্থী নগদ একাউন্ট খোলেন। বিভিন্ন সময়ে মোবাইলের নগদ একাউন্টে প্রাপ্য অংকের উপবৃত্তির টাকা মোবাইলে আসে। উক্ত টাকা উত্তোলনের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে পিন নম্বর চাইলে পিন নম্বরে সমস্যা সহ বিভিন্ন অজুহাত দেখাতে থাকে এবং আমাদেরকে স্থানীয় মোবাইলের দোকানে বারবার পাঠিয়ে হয়রাণী করেন। এরপর দেখতেপাই আমাদের মোবাইলের নগদ একাউন্টে আসা উপবৃত্তির টাকা নেই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম একটি সঙ্গবদ্ধ চক্রের সাথে যোগসাজসে প্রধান শিক্ষক জাকিয়া সু-কেীশলে ৪৩ জন শিক্ষার্থীর টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আলাউদ্দিন খান জানান, স্কুলের ৪৩ জনের উপবৃত্তির টাকা মোবাইল থেকে উধাও হওয়ার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাকিয়া বেগমের কাছে আমারা গেলে তিনি কোন গুরুত্ব দেয়নি। এ জন্য তাকে স্কুলে একটি সভা করতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং তার স্বামী মধু মিয়া আমাদেরকে মোবাইলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ, মারধর ও বাড়াবাড়ি করলে মামলা করার হুমকী দেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্ধ, প্রাক প্রাথমিকের খেলনা কেনা, ফ্যান বিক্রির টাকাসহ বিভিন্ন বরাদ্ধের টাকা আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ তার ছেলে বাড়িতে ব্যবহার করেন। এমনকি ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় ঝাড়– দেয়ান ও বাথরুম পরিষ্কার করান।
প্রধান শিক্ষক মোসা. জাকিয়া বেগম উপবৃত্তি ও ড্রেস কেনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বিদ্যালয়ের ৪৯ জন শিক্ষার্থীর তালিকা করে পাঠাই। তার মধ্যে ২৯জনে টাকা পায় নাই। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কি কারণে অভিভাবকরা টাকা পায়নি তা আমি কি করে বলবো, তাহলে তো আমাকেই নগদে কাজ করা লাগে। তবে যারা পায়নি তাদের তালিকা করে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ৭নং চেঁচরী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেকজন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও ড্রেস বানানোর টাকা না পাওয়ার বিষয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ (বরিশাল) এর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানার চেষ্টা করছি কিভাবে ও কোন মোবাইলের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং রিকর্ভারী করা সম্ভব কি না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে (১৮জুলাই) টাকা উত্তোলন না করার কারণে উহা ফেরত যেতে পারে।