শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
পদ্মা সেতুতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ২০০ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে। শুক্রবার (১লা জুলাই) সেতু উদ্বোধনের ষষ্ঠ দিনে জাজিরা ও মাওয়া দুই প্রান্ত মিলে এ টোল আদায় হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবুল হোসেন জানান, শুক্রবার সেতুর দুই প্রান্ত দিয়ে ২৬ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন পারাপার করেছে। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ১২ হাজার ৫৯৭টি যানবাহন পারাপার করেছে। এই প্রান্ত থেকে আদায়কৃত টোলের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫১ লাখ ১১ হাজার ১০০ টাকা। অপরদিকে, মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পারাপার হওয়া ১৩ হাজার ৮০১টি যানবাহন থেকে আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৪২ হাজার ১০০ টাকা।
শুক্রবার সেতুর উভয় প্রান্তে ছিল যানবাহনের উপচে পড়া ভিড়। দুপুরের পর থেকে জাজিরা প্রান্তে বাড়তে থাকে যানবাহনের সংখ্যা। বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টোল প্লাজার সামনে শত শত যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে দেখা গেছে। ছুটির দিন হওয়ায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন। তবে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সার্বক্ষণিক টোল আদায় সম্পন্ন করছেন টোল আদায় কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজটি যৌথভাবে পরিচালনা করছে পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন। তাদের পক্ষে মাঠপর্যায়ে এ কাজটি করছে টেলিটেল কমিউনিকেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আদায়কৃত টোল সেতু বিভাগের ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে। এর আগে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গত রবিবার সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ডটি ছিল ২ কোটি ৭৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ টাকা।
এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা আছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ ফান্ডের অর্থ ৩০০ কোটি টাকা। এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। ফলে সেতু বিভাগকে আসল হিসেবে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। এর সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ হারে সুদ গুনতে হবে। অর্থাৎ সুদ-আসলে পরিশোধ করতে হবে ৩৬ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে টোলের টাকা ব্যয়ের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সেতুর সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণে টোল থেকে আয়ের সাড়ে ৭ শতাংশ ব্যয় হবে।
এর মধ্যে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের খরচও আছে। প্রতি ১০ বছর পরপর বড় ধরনের মেরামত করতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চালুর দশম বছরে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। ২০তম বছরে ব্যয় করতে হবে এক হাজার কোটি টাকা। ৩০তম ও ৪০তম বছরে ব্যয় হবে দেড় হাজার কোটি টাকা করে। আদায় করা টোলের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কাটা যাবে। অবচয় হবে মোট নির্মাণব্যয়ের ২ শতাংশ হারে। সব ব্যয় শেষে যে টাকা থাকবে, তা থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। আর কিস্তি পরিশোধের পর যে টাকা (মুনাফা) থাকবে, তার ওপর ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দেবে সেতু বিভাগ।
প্রতি ১৫ বছর পরপর টোল হার ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। সে হিসাবে ২০৫৩ সাল নাগাদ একটি প্রাইভেট কারের টোল ২ হাজার টাকার বেশি হবে।