বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় দু’দিনের ব্যবধানে বিষপানে আরেক স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই স্কুল ছাত্রীর নাম সুরাইয়া আক্তার (১৫)। সে আমুয়া বন্দর আমীর মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং উপজেলার ছোনাউটা গ্রামের বাসিন্দা ও আমুয়া বাজারের চা দোকানী সিদ্দিক মোল্লার মেয়ে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আমুয়া শহীদ রাজা ডিগ্রী কলেজের শহীদ মিনার চত্ত¡রে গিয়ে সুরাইয়া আক্তার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়া তাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র (আমুয়া) ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার সুরাইয়ার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রতিবেশীরা জানান, পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মরিচবুনিয়া গ্রামের পান্না জোমাদ্দারের বখাটে ছেলে হুন্ডা রেন্ট-এ কার চালক সফিক জোমাদ্দারের (২০) সাথে সুরাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। ঘটনার দিন সকালে প্রেমিক সফিকের বাড়িতে অন্য এক প্রেমিকা চলে আসে, এ খবরে অভিমানে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সুরাইয়া। এছাড়া সফিক জোমাদ্দার এলাকার চিহ্নিত বখাটে ও লম্পট প্রকৃতির। এ বখাটের উত্যক্ত ও বিরক্ত করার কারণে মেয়েরা স্কুলে আসতো ভয় পেত। সে বিভিন্ন কৌশলে নিরীহ ছাত্রীদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফালানোর চেষ্টা করে উত্যক্ত করে আসছিলো।
আমুয়া বন্দর আমীর মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ শহীদ হোসেন গোলদার জানান, একটি নারী নির্যাতন মামলায় ২/৩মাস জেল খেটে বের হয়েছে সফিক। স্কুল ছাত্রী সুরাইয়া বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনার দিন সকালে এ বখাটে সফিকের বাড়িতে অপর এক প্রেমিকা (মেয়ে) বিয়ের দাবিতে বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল।
নিহত সুরাইয়ার বাবা মোঃ সিদ্দীক মিয়া বলেন, কি কারণে আমার মেয়ে সুরাইয়া আত্মহত্যা করলো এর কোন কারণ খুঁজে পাইতেছি না।
আমুয়া আমির মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শামীম হোসেন জানান, সুরাইয়া মেধাবী হিসেবে মোটামুটি হলেও তার চলাফেরা ও আচারণ খুবই ভালো মেয়ে ছিলো। যে কারণে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের কাছে সে প্রিয় ছাত্রী ছিলো। সুরাইয়ার আত্মহত্যায় মত্যুর ঘটনাটি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে।
কাঠালিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুরাদ আলী জানান, এ ঘটনায় বরিশালে ময়নাতদন্ত শেষে কোতয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৪ আগস্ট উপজেলার উত্তার আউরা গ্রামে মাদসেবী বখাটে সৈকত আকনের (২২) এর উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাবের যন্ত্রণায় নাসরিণ আক্তার (১৩) নামে অষ্টম শ্রেণির গলায় পাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।