শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন

উৎপাদন এলাকা বগুড়াতেই কাঁচা মরিচের বাজার টালমাটাল

উৎপাদন এলাকা বগুড়াতেই কাঁচা মরিচের বাজার টালমাটাল

উৎপাদন এলাকা বগুড়াতেই কাঁচা মরিচের বাজার টালমাটাল

অনলাইন ডেস্ক:

সবজির পাইকারি মোকাম বগুড়ায় কাঁচা মরিচের দাম এখনো চড়া। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া শহরের রাজাবাজারে পাইকারি পর্যায়ে ১ কেজি কাঁচা মরিচ ৩৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে দেশের অন্যতম বড় সবজির মোকাম মহাস্থান হাটে বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায়। বিকেলের দিকে ২২০ টাকায় নেমে আসে। এ হাটে আমদানি করা ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

এক হাত বদল হয়ে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজার ও বকশি বাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়। গত মঙ্গলবার মহাস্থান হাটে এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম উঠেছিল ৩৫০ টাকা। উৎপাদন এলাকাতেই কাঁচা মরিচের বাজার এমন টালমাটাল অবস্থা।

মহাস্থান হাটের ব্যাপারী মিনাদুল ইসলাম বলেন, কাঁচা মরিচের ব্যবসা করা এখন দায় হয়ে পড়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ে–কমে। আজ সকালে এক কেজি কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুপুরে সেই দাম ২০০ টাকায় নেমেছে। অন্য দিকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা কেজি দরে।

কাঁচা বাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বগুড়া শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বাড়তি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রির দায়ে আজ শহরের রাজাবাজার ও রেলবাজারে অভিযান চালিয়ে তিন ব্যবসায়ীকে সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মহাস্থান হাটে আজ ১৫ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন রহবল এলাকার কৃষক আবদুল বারিক (৫০)। এক কেজির দাম পেয়েছেন ২২০ টাকা। ব্যাপারীদের এক হাত বদল হয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী সবজির খুচরা বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে ভোক্তাদের গুনতে হয়েছে গড়ে ৪০০ টাকা।

মহাস্থান হাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, কুমিল্লাসহ দেশজুড়ে কাঁচা মরিচ সরবরাহ হয়। ঈদের আগে এ হাটে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম হলেও এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আজ এ হাটে রেকর্ড পরিমাণ কাঁচা মরিচের আমদানি হয়। কিন্তু সকালের দিকে দাম ছিল চড়া। তবে বিকেলে দাম কমেছে। মহাস্থান হাটের সবজি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ এ হাটে রেকর্ড পরিমাণ মরিচের আমদানি হয়েছে। দামও পড়তির দিকে।

মহাস্থান হাটের ব্যাপারী, আড়তদার ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি এ হাটে সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধির পর গত মঙ্গলবার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৫০০ থেকে ২০০ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু গতকাল বুধবার সেই কাঁচা মরিচ হঠাৎ করে আবারও প্রতি কেজির দাম এক লাফে ৩৫০ টাকায় ওঠে। শহরের খুচরা বাজারে এই মরিচ ওঠে ৫০০ টাকায়।

আজ সকালে মহাস্থান হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। দুপুরের দিকে তা ২০০ টাকায় নেমে আসে। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ দুপুরের দিকে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় নেমে আসে। ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের রাজাবাজারে পাইকারি পর্যায়ে এক কেজি কাঁচা মরিচ ৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ফতেহ আলী বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম হাঁকা হয়েছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাক।

মহাস্থান হাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে আসা রায় মাঝিড়া গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, ‘পত্তার (মরিচ) বাজার টালমাটাল। ওদিনক্যা ৫০০ টেকা কেজি দরে বেচ্চি। কাল বেচ্চি ৩৫০ টেকা কেজি দরে। আজ এক কেজি পত্তা বেচনু ২০০ টেকা কেজি।’

ফতেহ আলী বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা জলেশ্বরীতলা এলাকার গৃহিণী রোকেয়া বেগম বলেন, দুই দিন আগেই ২০০ টাকায় এক কেজি কাঁচা মরিচ মিলেছে। গতকাল তা হঠাৎ করে আবার ৪০০ টাকা কেজিতে ওঠে। আজও (বৃহস্পতিবার) ৪০০ টাকা দরে কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে।

রাজাবাজারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ  বলেন, সকালে এখানকার আড়তে ৩৮০ টাকা দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হলেও মহাস্থান হাটে দাম পড়ে যাওয়ায় এখানেও কাঁচা মরিচের দাম ২৫০ টাকায় নেমে আসে।

কাঁচা মরিচের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আজ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রথমে রাজাবাজারে অভিযান চালিয়ে এক ব্যবসায়ীকে পাঁচ হাজার টাকা এবং পরে রেললাইন বাজারে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করায় দুজন খুচরা ব্যবসায়ীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম।

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ 01774937755 অথবা ই-মেইল: kathaliabarta.com












All rights reserved@KathaliaBarta 2016-2025
Design By Rana