মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠিতে নিজের নামটি সঠিকভাবে লিখতে বা বানান উচ্চারণ করতে না পারলেও অনেকেই এখন সাংবাদিক পারিচয় দেয়। নিজেকে বলেন ডিজিটাল সাংবাদিক। পড়া বা লিখার প্রয়োজন নেই। দেখতে ও বলতে পারলেই সাংবাদিক। তবে, তারা কেউ আবার সাংবাদিক শব্দটিও উচ্চারণ করতে পারেন না। বলেন, সম্বাদিক। কেউ বলেন, সাম্বাদিক। এদের গলায় ব্যাগ, কোমরে হরেক রঙের বাহারী পরিচয়পত্র, হাতে বুম ও গলায় মাইক্রো ফোন ঝুলিয় তাদের বেশিরভাগই নতুন মোটরসাইকেলে চষে বেড়ায় পুরো এলাকা যেনো দেখার কেউ নেই।
এদের বেশ-ভুষা দেখে দাপুটে সাংবাদিক মনে হলেও পরিচয়পত্র দেখলেই অবাগ হয়ে পরার মত অবস্থা। তাদের কারণে পেশাদার সাংবাদিকগণ রয়েছেন চরম বিপাকে।সাংবাদিকতা বা সাংবাদিক কাকে বলে এর নূন্যতম কাণ্ডজ্ঞান না থাকলেও নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে স্বার্থ হাসিল করারধান্দায় তারা এত চটুল, ঠিক, প্রতারণার আশ্রয় নেয়।
এমন ভাবে তারা নিজেদের উপস্থাপন করে যে, তাদের ভাবসাব দেখলে মনে হবে দেশের কোন যেন স্বনামধন্য প্রথম সারির গণমাধ্যম কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে এরা ভুয়া অপসাংবাদিকতা করছে। একশ্রেণীর ভুঁইফোড় অনলাইন টিভি ও অনলাইন পোর্টালের এক থেকে পাঁচ হাজার টাকায় সাংবাদিকের কার্ড কিনে পুরো ঝালকাঠি জেলায় চষে বেড়াচ্ছে প্রায় শতাধিক ভূয়া সাংবাদিক। একশ্রেণীর সংঘবদ্ধ এসব অসাধু চক্রের কাছ থেকে অনলাইন পত্রিকা ও অনলাইন টিভির কার্ড নিয়ে তারা যাইচ্ছা করে বেড়াচ্ছেন।
অথচ এর মধ্যে অনেকে স্কুলের গন্ডিও পেরেয়েছে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দিহান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাড়ায় মটোরসাইকেল চালক, মুদির দোকানি, এমনকি মাদক ব্যবসায়ীরাও পিছিয়ে নেই কার্ড কিনে সাংবাদিক পরিচয়ে দাপিয়ে বেরাতে। এরা সাংবাদিক সেজে মোটরসাইকেলে প্রেস ও সাংবাদিক লিখে বোকা বানাচ্ছেন বিভিন্ন মহলকে। তথাকথিত অনলাই পত্রিকা ও টেলিভিশনতো আছেই। মফস্বল এলাকায় এরকম পত্রিকা ও টেলিভিশন প্রতিনিধিদের বেশদাপট। ব্যস্ত সাংবাদিক। প্রিন্ট বা অনলাইন পোর্টালে কোন কথা লিখা যাবে, কোন কথা লিখা যাবে না, অথবা কোন ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা যাবে আরকোন ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা যাবে না সেই সম্পর্কে তাদের কোনো নুন্যতম ধারণা নাই। এরা মুঠোফোনে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় যেকোনো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে সেটি অনলাইন টিভি চ্যানেল বলে প্রচার করছে।
কোনটি টিভি চ্যানেল, কোনটি অনলাইন টিভি, কোনটি ফেসবুক পেইজ এসব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণা নাই, আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর টাউট-বাটপার অনলাইন টিভিচ্যানেলের নাম ভাঙ্গিয়ে সাংবাদিকতার নামে প্রতারণা করে চলেছে। তাদের প্রতারণার কারণে টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকগণ চরমবিপাকে পড়েছে।
কারণ টিভি চ্যানেলে সংবাদের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রচার করে, তাই সব ঘটনা প্রচার করা সম্ভব হয় না। কিন্তুএকশ্রেণীর এসব টাউট-বাটপার মুঠোফোনে যেকোনো ঘটনার ভিডিও করে তা ফেসবুক পেইজে শেয়ার করে টিভি চ্যানেল বলেপ্রচার করে সাধারন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।
অনেকে আবার সাংবাদিকদের সংগঠনে নিজের নামটা লিখিয়ে নেয়, তা না হলে নিজেরাই কিছু একটা ভূইফোঁড় সংগঠন খুলে বসেন। ভূয়া সাংবাদিকের নানা অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার উপক্রমহয়েছে। একশ্রেণীর এসব টাউট-বাটপারদের কারণে পেশাদার সাংবাদিকগণ পেশাগতদায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছে মুলধারার সাংবাদিকরা ।