শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩জন নি’হ’ত কাঠালিয়ায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অবহিতকরণ সভা কাঠালিয়া উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত কাঠালিয়ায় উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের গণপদত্যাগ সরকারী কর্মচারীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক শিক্ষা পদক”- ২০২৩ লাভ করেছেন টিএম শাহ্ আলম কাঠালিয়ায় বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে : শাহজাহান ওমর দেশের সব থানার ওসি বদলের নির্দেশ ইসির হ্যাডম আছে বিধায় তো নেত্রী আমারে নমিনেশন দিছে : শাহজাহান ওমর ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদল
হারিয়ে যাচ্ছে হাতে লেখা চিরচেনা রংতুলির হস্তশিল্পের কাজ

হারিয়ে যাচ্ছে হাতে লেখা চিরচেনা রংতুলির হস্তশিল্পের কাজ

হারিয়ে যাচ্ছে হাতে লেখা চিরচেনা রংতুলির হস্তশিল্পের কাজ

সাকিবুজ্জামান সবুর:

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় একসময় রং তুলির আচড়ে ব্যানার বা সাইনবোর্ড লিখে জীবিকা নির্বাহ করত কিছু শৌখিন বা পেশাজিবী হস্তশিল্পিরা। কালের পরিক্রমায় পেশাটির গুরুত্ব বেড়ে কাজের বিস্তৃতি লাভ করে শিক্ষিত বেকার তরুন সমাজের মধ্যে। রং তুলি দিয়ে কাজ করার হস্তশিল্পের এ পেশায় তরুন সমাজের আগমনে উপজেলায় গড়ে ওঠেছিল বেশকিছু আর্টের দোকান। আধুনিক যুগে ডিজিটাল নির্ভর কর্মক্ষেত্রে ডিজিটাল সাইনবোর্ড বা ব্যানার লিখন কাজের ব্যাপক চাহিদায় কদর কমেছে মূল ধারার এ চারু শিল্পিদের।

সরকার চারু বা হস্তশিল্পের উপর গুরুত্ব দিয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত চারুকারু শিক্ষার জন্য জুড়ে দিয়েছে বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যবই। বাস্তবিকভাবে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা অর্জন করে ভবিৎষত কর্মক্ষেত্রের কোন জায়গাতেই প্রয়োগের স্থান না দেখে আঁকাঝোকায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছেনা আাঁকা ঝোকার ঝোক। এজন্য ক্রমেই বিলুপ্তি হয়ে পড়ছে দেশের গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে চারু শিল্পিদের কারুকাজ। সচারচর দেখা মিলছেনা মনের মাধুরি মিশিয়ে রং তুলি দিয়ে চারু শিল্পের কাজের ব্যাপকতা।

আরও পড়ুন : একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিলেন কাঠালিয়ার গৃহবধূ মুক্তা

শহর ছাড়িয়ে এখন গ্রামেও ডিজিটাল ব্যানার লিখনের কাজ প্রসার লাভ করেছে। জীবিকা নির্বাহের প্রতিযোগিতায় রং তুলি ছেড়ে শিল্পিরা ঝুঁকে পড়ছেন অন্য পেশায়। তারপরও যারা এ পেশা আকড়ে জীবিকা অর্জনে টিকে থাকলেও নেই তেমন একটা ভাল অবস্থানে। দেয়ালে কাপড় টানিয়ে ব্যানার লিখন, লঞ্চ, ষ্টিমারে আঁকাঝোকার কাজ ও প্রতিষ্ঠানে দেয়াল লিখন কাজের পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে ডিজিটাল ব্যানার। সর্বোপরি, শতপ্রতিকুলতার মাঝেও উপজেলার পথে ঘাটে কোন কোন জায়গায় এখনো দেখা মিলছে রং তুলি দিয়ে কাজ করা গ্রাম বাংলার একসময়কার চিরচেনা আর্টশিল্পিদের।

হাতে লেখার ব্যানারটির স্থায়িত্ব অনেক বেশি থাকলেও ডিজিটালের ব্যানার প্রাকৃতিক নানান কারনে অল্পতেই শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া, ডিজিটাল ব্যানারে কোন ভুল হলে সাড়ার কোন উপায় না থাকলেও হাতে লেখা ব্যানারে ভুল ধরা পড়লেই তৎক্ষনাত ঠিক করা সম্ভব।

গতকাল দুপুরে কথা হয় এ উপজেলার একজন হস্ত শিল্পি গান্ধী হাওলাদারের সাথে। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে আর্টশিল্পে নিয়োজিত রয়েছে। তিনি উপজেলার থানা সংলগ্ন বৈশাখী আর্ট এর স্বত্তাধিকারী। তিনি বলেন, একসময় সরকারি অফিস আদালতের সমস্ত প্রকার সাইনবোর্ড ব্যানার তিনিই লিখতেন। প্রতিনিয়ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটানা কাজ চলত তার। বিভিন্ন দিবসসহ নানা সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে কাজের অর্ডারে কখনো গভীর রাত পর্যন্তও কাজ করতে হতো। এজন্য তিনি প্রতিদিন গড়ে সহ¯্রাধিক টাকা উপার্জন করতেন। তিনি আরও বলেন, এখন সর্বত্র ডিজিটাল ব্যানারের প্রভাবে সাইনবোর্ড, ব্যানার লিখনের কাজ তেমন একটা আসেনা বললেই চলে। তবে এখনো পথে ঘাটের দেয়াল, লঞ্চ, ষ্টিমারসহ বিদ্যালয়ের দেয়াল লিখনের কাজে তাদের কিছুটা চাহিদা থাকায় পেশা আকড়ে বেঁচে আছেন।

রংতুলির সাহয্যে হাতে লেখা আর্টশিল্পিরা জানিয়েছেন, একসময় শিক্ষিত যুব সমাজেরা সম্মানের সাথে এ পেশাকে সাদরে গ্রহন করে জীবিকা নির্বাহে সাচ্ছন্দ মনে করে অনেকে পেশাকে বেছে নিয়েছেন। কালের প্রবাহে আধুনিকতায় ডিজিটাল ব্যানারের ছড়াছড়িতে কেউ কেউ পেশাকে নেশা হিসাবে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করলেও নুতন করে এ পেশায় আসছেনা কেহ।

এ বিষয়ে উপজেলার শহীদ রাজা ডিগ্রী কলেজের আইসিটির প্রভাষক মো. ইউসুফ আলী খান বলেন, বর্তমানে আধুনিক যুগে ডিজিটাল নির্ভর কর্মক্ষেত্রে ডিজিটাল সাইনবোর্ড বা ব্যানার লিখন কাজের ব্যাপক চাহিদার কারণে কদর কমেছে মূল ধারার চারু শিল্পিদের।

আমরবিুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বাস্তবিকভাবে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা অর্জন করে ভবিৎষতে কর্মক্ষেত্রের কোন জায়গাতেই প্রয়োগের স্থান না দেখে আঁকাঝোকায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তেমন কেহ। তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছেনা আাঁকা ঝোকার ঝোক। এজন্য ক্রমেই বিলুপ্তি হয়ে পড়ছে দেশের গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে চারু শিল্পিদের কারুকাজ।

কচুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, চারুশিল্পের উপর গুরুত্ব দিয়ে সরকার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত চারুকারু শিক্ষার জন্য জুড়ে দিয়েছে বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যবই। বাস্তবিকভাবে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা অর্জন করে ভবিৎষতে কর্মক্ষেত্রের কোন জায়গাতেই প্রয়োগের স্থান না দেখে আঁকাঝোকায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন







All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana