শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই সপ্তাহ পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন সেলিম তালুকদার (৩০)। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে বুধবার তিনি মারা যান। এদিন সকাল ৮টায় চিকৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সেলিম ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার মল্লিকপুর গ্রামের মো. সুলতান হোসেন তালুকদারের ছেলে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোররাতে তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
নিহত সেলিমের স্বজনরা জানান, গত ১৮ জুলাই বাড্ডা লিংক রোডের কুমিল্লাপাড়ার বাসা থেকে সকালে নারায়ণগঞ্জে তার অফিসে যাওয়ার জন্য বের হন সেলিম। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘর্ষের মধ্যে আটকে পড়েন তিনি।
এ সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেলিম গুলিবিদ্ধ হন। তিনি মাথা, বুক ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হন। কে বা কারা প্রথমে মুগদা হসপাতালে নেন তাকে। সেখান থেকে সেলিমের মোবাইলে থাকা তার মায়ের মোবাইল নম্বরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফোন দেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি।
ফোনে খবর পেয়েই স্বজনরা ওই হাসপাতালে ছুটে যান। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে স্বজনরা বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও আইসিইউ খালি পাননি। একই সঙ্গে প্রশাসনিক হয়রানির ভয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানান বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।
পরদিন স্বজনরা ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করান সেলিমকে।
স্বজনরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও জানান, প্রায় এক বছর আগে বিয়ে করেন সেলিম। বিজিএমই ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে আড়াই বছর আগে তিনি স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। তারা তিন বোন, এক ভাই। সেলিম ছিলেন মেজো।
নিহত সেলিমের ছোট বোন সোমা এ ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনা নিয়ে আমরা কিছু বলতে চাই না। মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ নিয়ে জানান, এ ঘটনায় আমরা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, আমরা যা হারানোর তা হারিয়েছি। পত্রিকায় প্রকাশ হলে বা মামলা করলে আমরা তো আর ভাইকে ফেরত পাব না। তাই কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না।
নলছিটি থানার ওসি মো. মুরাদ আলী জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেলিমের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।