রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রাতে ঘরে ঘুমাতে পারছেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে পুলিশ গিয়ে তল্লাশী চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি কোটা সংস্কার আন্দোলনে জেলার রাজাপুরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থী।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠিতে কারফিউ জারি করার পর থেকে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশী চালাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। রাতে বাড়িতে তল্লাশী করায় নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে ভয়ে আছেন তাদের পরিবার। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে এবং ওয়ারেন্ট আছে, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এতে নিরিহ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলেও জানায় পুলিশ।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, আমি একজন আইনজীবী হয়েও গত এক সপ্তাহ ধরে আদালতে যেতে পারছি না। রাতে বাসায় ঘুমাতেও পারছি না। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশী চালাচ্ছে। এতে আমাদের পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কিত।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন বলেন, কয়েক দফায় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশী করছে। পুলিশের অভিযানের কারণে কেউ বাসায় থাকতে পারছে না। অনেক অসহায় নেতাকর্মী পালিয়ে থাকায় তাদের পরিবারের দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের বাড়িতে তল্লাশী চালানো হচ্ছে। নিরিহ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
এদিকে কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে চারজনকে ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত আটক করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছে রাজাপুর থানা পুলিশ। চারজনের মধ্যে একজন উপজেলার ইন্দ্রপাশা গ্রামের মহসিন খানের ছেলে খায়রুল ইসলামকে দুই দফায় আটক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ২৩ জুলাই রাতে অভিযান চালিয়ে আসাদুজ্জামান নামের একজনকে আটক করে বুধবার সকালে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয় পুলিশ। যার কারণে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা নিজ বাসভবন ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমার ছেলে কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বাড়িতে কয়েক দফা পুলিশ অভিযান করেছে। আমার ছেলেকে থানায় নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। এতে আমরা এখন আতঙ্কিত।
এবিষয় রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কারফিউর জন্য পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে।