বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
বার্তা ডেস্ক:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ার মহিষকান্দি সেপটিক ট্যাংকির ভিতরে সেন্টারিং খুলতে গিয়ে রাজমিস্ত্রী মারা যাওয়ার ঘটনা গোপন রেখে প্রতিবেশি মজনু মিয়াকে বাড়ি থেকে জোর করে ধরে এনে ট্যাংকির মধ্যে ঢুকিয়ে হত্যা করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার (৭জুলাই) রাত নয়টায় নিহত মজনু মিয়ার বাবা শাহদৎ হোসেন মিয়া বাদি হয়ে বাড়ির মালিক ফ্রান্স প্রবাসী মিরাজ খানের ছোটভাই পলাশ খানকে(২৮)প্রধান আসামি করে কাঁঠালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পলাশ খান পূর্ব মহিষকান্দি গ্রামের আলতাফ হোসেন খানের পুত্র। এ মামলায় অপর দুই আসামি হচ্ছে, পলাশ খানের সহযোগী চেঁচরী রামপুর গ্রামের মোজাম্মেল মিয়া ছেলে ইলিয়াস মিয়া ও ওরফে গাঞ্জা ইলিয়াছ (২৯) এবং একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে রিপন ওরফে গাঙ্গুয়া রিপনকে (২৮)।
মামলার বিবরণে জানাযায়, উপজেলার পূর্ব মহিষকান্দি গ্রামের ফ্রান্স প্রবাসী মিরাজ খানের নির্মাণাধীন ভবণের সেপটিক ট্যাংকি প্রায় মাস পূর্বে তৈরি করা হয়। এতে আসাদুল(৩০) নামের রাজমিস্ত্রী কাজ করেন। মঙ্গলবার (৬জুলাই) সকালে ওই ট্যাংকির সেন্টরিং খোলার জন্য মিস্ত্রী আসাদুল ভিতরে নামার কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সে অসুস্থ ও দম বন্ধ হয়ে মারা যায়। বাড়ির মালিকের ছোটভাই(ভবণের দেখবালকারী) পলাশ খান ও তার লোকজন মিস্ত্রি আসদুলের মৃত্যু নিন্চিত হয়ে এ ঘটনা গোপন রেখে পাশর্^বর্তী বাড়ির সামনে গিয়ে দোকানে চা-রুটি খাওয়ারত অবস্থায় মজনু মিয়া (২৫)নামের এক যুবককে জোর করে হাত ধরে নিয়ে আসেন এবং ট্যাংকির মধ্যে সাপ ঢুকছে লাঠি নিয়ে জোরপূর্বেক ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। ট্যাংকির ভিতরে নেমে মজনু আসাদুলের লাশ দেখে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করলে পলাশ ও তার দুই সহযোগী ইলিয়াম ও রিপন মজনুর মাথা চেপে আবার ট্যাংকির ভিতের পাঠিয়ে দিয়ে আসাদুলের লাশ তুলে নিয়ে আসার জন্য। ভিতরে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে মজনু মিয়াও মারা যায়। এ সময় মজনুর ছোট বোন ও চাচিসহ স্বজনরা ট্যাংকির ভিতর থেকে মজনুকে উদ্ধারের জন্য বারবার নামার চেষ্টা করলে পলাশ খান ও তার লোকজন নামতে বাঁধা প্রদান ও মারধর করে। এদিকে মজনুকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা না করে পলাশ খান বাড়ির
বাইরে গিয়ে কিছুক্ষণ পর শুভ (২২) নামে এক প্রতিবেশীকে নিয়ে আসে এবং তার মুখে গামছা ও কোমরে দড়ি বেঁধে ট্যাংকির ভিতরে পাঠানো হয়। শুভ ওই দড়ি দিয়ে মিস্ত্রি আসাদুল ও মজনুর লাশ বেঁধে দেয়ার পর লাশ দুটি ট্যাংকি থেকে ওঠানো হয়। এরই মধ্যে শুভ অসুস্থ হয়ে জ্ঞানহারালে দ্রুত তাকে হাসপতালে পাঠানো হয়। পলাশ খান ঘটনা অন্যদিকে নেয়ার উদ্দেশ্যে তরিঘরি ও কৌশল করে চিকিৎসার অজুহাতে লাশ দুইটি পাশর্^বর্তী ভান্ডারিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কাঠালিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, মহিষকান্দি এলাকায় সেপটিক ট্যাংকির সেন্টারিং খুলতে গিয়ে মিস্ত্রীসহ দুইব্যক্তি দম বন্ধ হয়ে মারা যায়। এদের মধ্যে মজনুরকে জোর করে সেপটিক ট্যাংকির মধ্যে ঢুকিয়ে হত্যা করার অভিযোগে তার বাবা বাড়ির মালিকের ছোটভাই পলাশ খানসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।