মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন
বার্তা ডেস্ক:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বাজারে গরু বাঁধাকে কেন্দ্র করে গরু ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষের মারামারি ঘটনার সালিশ বৈঠকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা কামালের(মেম্বর) নির্দেশে এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ছয় গরু ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম, নগদ আড়াইলাখ টাকা ও দুটি গরু ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহতদের উপজেলা স্বাস্থ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আহত ছাত্র কামাল ও রাসেলের অবস্থা আশংকাজনক।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের মরিচবুনিয়া বাজারের গরুর হাটে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) উপজেলা মহিষকান্দি এলাকার গরু ব্যবসায়ী ইউসুফ তালুকদার, তার তিন ছেলে ও শাহজাহান বিশ^াস দুইটি ট্রলারে করে ২০টি গরু নিয়ে পাশর্^বর্তী মচিরবুনিয়া বাজারের গরুর হাটে আসেন। হাটে গরু ওঠানোর পর বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় বাঁধার সময় বাজারে ক্লাবের পিলারের সাথে একটি গরু বাঁধলে স্থানীয় সোহেল ও সিরাজ নামের দুই ব্যবসায়ী এতে বাঁধা দেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতা-হাতি হলে উপস্থিত ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষনিক বিষয়টি থামিয়ে দেন। পরে বাজার শেষে দুপুরে বাজার কমিটির সভাপতি ও ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বর) মোস্তাফা কামাল এ ঘটনা মিমংশার জন্য গরু ব্যবসায়ী ইউসুফ তালুকদার ও প্রতিপক্ষ সোহেলসহ দুই পক্ষসহ স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাজারের টলঘরে এক সালিশ বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে মেম্বর মোস্তফা কামালের সামনেই গরু ব্যবসায়ী ইউসুফ তালুকদার তার তিন ছেলে ও এক ভাইকে বেদম পিটানো হয়।
আহত গরু ব্যবসায়ী ও মহিষকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ফুল মিয়া তালুকদার(৩৫) জানান, আমাদের পরিবার পেশাগত গরু ব্যবসায়ী। বাবা-চাচারা দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে গরুর ব্যবসার সাথে জড়িত। সালিশ বৈঠক শুরুতেই পক্ষদ্বয়ের বক্তব্য শোনার পূর্বেই মোস্তফা মেম্বর তার লোকজনকে বলেন, ‘‘ওদের এখনো সুস্থ রাখছো’’ এ কথার বলার মূর্হুতের মধ্যে মোস্তফা মেম্বরের সামনেই তার লোকজন ইউসুফ তালুকদার, তার ভাই ও তিন ছেলেদের উপর চড়াও হয়ে কিল-লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন এবং যার যা হাতে ছিলো তা দিয়ে এলোপাথরী পিটায়ে ফুল মিয়া (৩৫), তার বৃদ্ধ বাবা ইউসুফ তালুকদার(৬০), চাচা শাহজাহান(৭৫), ভাই রাসেল(২৬) ও ছোট এসএসসি পরীক্ষার্থী কামালাকে(১৮) এবং রফিক(২২) নামের অপর এক ব্যবসায়ীকে মাটিতে ফেলে দেয়। এ সময় ছোট ভাই রাসেলের কোমরে বাঁধা ২ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ ব্যাগটি (খুতি) ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আমাদের অবিক্রিত দুটি গরুও (একটি লাল এবং একটি কালো) নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। যার মূল্য ২লাখ ২০হাজার টাকা।
গরু ব্যবসায়ী ইউসুফ তালুকাদার জানান, এই মরিচবুনিয়া বাজারের গরুর হাটটি মিলানোর জন্য আমি অনেক শ্রম দিয়েছি। প্রতি বাজারের আমি ১৫ থেকে ২৫-৩০টি গরু নিয়ে আসি। হয়তো এটা অনেকের চোখে লাগছে। আমাদের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে মোস্তফা মেম্বার ও তার লোকজন মারামারি ও সালিশ বৈঠকের নামে আমাদেরকে প্রকাশ্যে বাজারে বসে সকলের সামনে গরুর মতো পিটিয়ে আহত করে দুটি বড় গরু এবং টাকার ব্যাগ কোমর থেকে নিয়ে যায়।
বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, আমি ইজারাদারের মাধ্যমে খবর পেয়ে (শেষহাটা) বাজারে এসে উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংশার জন্য বসলে বৈঠকের মধ্যেই উত্তেজিত হয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে আমি এবং আমি ও আমার লোকজন অনেক কষ্টে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। গরু ও টাকা ছিনতাইয়ের খবর আমি জানি না।
কাঠালিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, মরিচবুনিয়া বাজারের গরু ব্যবসায়ীদের মধ্যে মারামারি মৌখিব অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।