মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

কাঠালিয়ায় অতিথি পাখির অভয়াশ্রম

কাঠালিয়ায় অতিথি পাখির অভয়াশ্রম

কাঠালিয়ায় অতিথি পাখির অভয়াশ্রম

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া-বেতাগীর মাঝখানে বিষখালী নদীতে রয়েছে বিশাল চর। এ চরে থাকে টুনটুনি, বক, ময়না, টিয়া, ঘুঘু, পেঁচা, বুলবুলি, কাক, শালিক, বাবুই, ডাহুক, বৈরী, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বউ কথা কও, দোয়েল, কোকিল, চিলসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখি। শীতকালে আশ্রয় নেয় বেশ কয়েক জাতের অতিথি পাখিও।

পাখির নিরাপদ বসবাসের জন্য বিভিন্ন গাছে ঝুলানো রয়েছে হাঁড়ি। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চরটি দেখভাল করছে। স্থানীয় প্রশাসন এ চরটির নামকরণ করেছে ‘পাখির চর’ হিসেবে।

জানা গেছে, ঝালকাঠির সুগন্ধা-গাবখান ও বিষখালী নদীর মোহনা থেকে বিষখালি নদীর উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণে ২০৫ কিলোমিটারজুড়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে বিষখালী নদী। যা গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া-বেতাগী মাঝখানে বিষখালী নদীতে রয়েছে বিশাল চড়। সেই চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয় কাঠালিয়া উপজেলা প্রশাসন। রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক তদারকির দায়িত্ব অর্পণ করা হয় উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদকে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কাঁঠালিয়ার দক্ষিণ শৌলজালিয়া মৌজার ১০৩ দশমিক ৩ একর জমি পাখির অভয়ারণ্যের আওতায় থাকবে। সেখানে পাখি শিকার, মাটি কাটা, গাছ কাটা, বালু উত্তোলন ও গরু-মহিষ চড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রকৃতিকে সবুজ ও সুন্দর রাখতে ‘এসো পাখির বন্ধু হই ’ স্লোগান সংবলিত সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে।

শৌলজালিয়া খেয়াঘাট বিষখালী নদীর বুকে জেগে উঠা মাঝের চর পাখির অভয়ারণ্য স্পিডবোটে পৌঁছে ও স্থলে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেছেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল। এ সময় কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নেছার উদ্দিন ও থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন সরকার, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন উপস্থিত ছিলেন। ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তারা পরিদর্শন করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, বিষখালি নদীর শৌলজালিয়া-বেতাগীর মাঝখানে চর প্রশাসনিকভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণার প্রেক্ষিতে ‘পাখির চর’ ঘোষণা করে ৩ বছর পূর্বে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নোটিশ হিসেবে লেখা রয়েছে ‘মহিষ, গরু, ছাগল পালন করে ঘাস খাওয়ানো বা অন্য কোনো উদ্দেশে উক্ত চরে চড়াবেন না। মাটি, বালু, গাছ কেউ কাটবেন না। চরের চারপাশে কেউ মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ঝাউ বা গাছের ডাল ফেলবেন না। উভয়ই আইনত অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ চর আপনার আমার সবার জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।’

তিনি আরো জানান, ২০২০ সালে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রয়োজনের তাগিদে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পাখির চর রক্ষণাবেক্ষণে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সেই থেকেই সঠিকভাবে সংরক্ষণে সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। এটিকে আরো দৃষ্টিনন্দন করতে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য দর্শনে এক সময় বিনোদন প্রেমীদের ভিড় পড়বে।

শৌলজালিয়া ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে এ চরকে ‘শেখ রাসেল ইকোপার্ক’ নামকরণ করে আরো সমৃদ্ধশালী করার দাবি জানান চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন।

ইউএনও মো. নেছার উদ্দিন বলেন, বিষখালী নদীর বুকে জেগে ওঠা ৩০ বছর আগের এ নৈসর্গিক চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এতে পাখির বংশবৃদ্ধি পেয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা হবে।

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কাঠালিয়া বার্তা’য় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : মোবাইলঃ ০১৮৪২২৫৩১২২












All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana