ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার তরকারি বাজার সংলগ্ন খালের ওপর ১ কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি আজও অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। প্রায় এক বছর আগে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ সড়ক) না থাকায় সাধারণ জনগণের কোনো উপকারেই আসছে না এটি। সেতু নির্মাণের পরও যাতায়াতে দুর্ভোগ কাটেনি এলাকাবাসীর। ফলে সেতুটি হয়ে আছে অচল একটি কাঠামো, সাধারণ মানুষের জন্য সৃষ্টি করছে চরম দুর্ভোগ।" প্রতিদিন শত শত মানুষকে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে অপচয়ের খাতায় চলে যাচ্ছে সরকারের অর্থ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২ সালে রাজাপুর বাজারের পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের শেষ দিকে সেতুর ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হলেও আজ পর্যন্ত নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়ক। পুরো প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার টাকার বেশি। কিন্তু অ্যাপ্রোচ সড়ক ছাড়া এই সেতু এখন পরিণত হয়েছে এক অপূর্ণ উন্নয়ন কাঠামোয়। সেতুটি নির্মাণের ঠিকাদারি কাজ করেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করীম জাকির ওরফে জিএস জাকির। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকে তিনি এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দেন। এরপর থেকে থমকে যায় সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ।
বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতু নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে। এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। সেতুর দুই পাড়েই রয়েছে স্কুল-কলেজ, বাজার, এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। প্রতিদিন গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে পার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, রোগী, বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষকে। অনেক সময় শিশুরা সেতুতে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও কষ্টসাধ্য।
বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেড় কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও এর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ফলে কাঁচাবাজারে মালামাল নিয়ে অনেক দূরের পথ ঘুরে কষ্ট করে আসতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। খালটির উভয় পাশে রয়েছে পিচঢালা পাকা রাস্তা কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় ক্রেতারা বাজার করে রিকশা বা ভ্যানে চড়ে বাড়ি যেতে পারছেন না। চলাচলের যোগ্য পুরাতন সেতু ভেঙে ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের শুরু থেকে প্রায় দুই বছর ধরে এ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ভুক্তভোগী শিক্ষক ছগির মৃধা বলেন, সেতুটির দক্ষিণ পাড়ে কাঁচাবাজারসহ উভয় পাড়ে স্থায়ী মার্কেট থাকায় এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুটি পারাপার হচ্ছেন। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
বাজারে আসা উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. মাহিন খান বলেন, সেতু নির্মাণের প্রায় দুই বছর পার হলেও এখনো তৈরি হয়নি সেতুর দুপাশে চলাচলের রাস্তা। এতে সেতুর সুবিধা পাচ্ছেন না দুই পারের কয়েক হাজার মানুষ।
ভ্যান চালক রহিম বলেন, এ রাস্তা দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করতে খুবই কষ্ট হয়। এত টাকার সেতু এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য নতুন করে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যে কাজটা হয়ে যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.