অনলাইন ডেস্ক:
বরগুনা পৌরসভায় এ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ছাড়াও অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাও মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদ ছাড়া মেয়র পদে কোনো নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এবারই প্রথম এ পদে কোন নারী প্রার্থী হিসেবে মিতুল মনোনয়ন দাখিল করলেন। একই সাথে মেয়র পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মিতুলের বাবা বরগুনা পৌরসভার বর্তমান মেয়র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) শাহাদাত হোসেন। আগেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন। বাবা-মেয়ের মেয়র প্রার্থী হওয়ার এ ঘটনা এখন পৌর শহরের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। শুরু হয়েছে নতুন করে ভোটের হিসাব-নিকাশ।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় নিজ জীবনের ঝুঁকিতে আছেন মিতুলের বাবা মেয়র শাহাদাত হোসেন। যেকোনো মূহুর্তে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে নিজের পাশাপাশি মেয়েকে দিয়েও মনোনয়নপত্র দাখিল করাতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নারী মেয়র প্রার্থী মহসিনা মিতুল বলেন, মনোনয়নপত্র কেনার আগেই আমাদের বাসার সামনে এসে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছিল, যাতে আমার বাবা নির্বাচনে প্রার্থী না হন। আমরা এ ঘটনায় বরগুনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি।
মিতুল আরও বলেন, আমাদের বাসার সামনে গত নির্বাচনে ক্রোক স্কুলে সভা চলাকালে আমার ওপর হামলা হয়েছিল। এবারও আমরা শঙ্কায় আছি, আমার বাবা বা আমাদের পরিবারের কেউ নিরাপদ বোধ করছি না। সে কারণেই আমিও মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।
এদিকে বাবা-মেয়ের একসঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘটনাকে, মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীকে চাপে রাখার কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। এবিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজের বক্তব্যর জন্য বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু সাংবাদিকদের বলেন, মেয়র শাহাদাত হোসেন বরগুনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০১৫ সালেও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। টাকার জোরে নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দলীয় প্রার্থীকে আহত করে ভোট কেটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, এবারও শাহাদাত হোসেন দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে নিজে স্বতন্ত্র, মেয়ে মিতু ও তার সমর্থক নিজাম উদ্দিনকে দিয়ে স্বতন্ত্র মনোনয়নপত্র দাখিল করিয়েছেন। গত ১০ বছরে তিনি ও তার অনুসারীরা পৌরসভা লুটপাট করেছেন। পৌরসভার মেয়র হওয়া তার কাছে এক ধরনের বাণিজ্য। এ কারণে এবারও টাকার জোরে মেয়র হওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি প্রচার চালানোয় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে কেউ যদি জল ঘোলা করে ফায়দা নিতে চেষ্টা করে, আমরা সেটাও প্রতিহত করতে চেষ্টা করব। এবার দলের সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ। তার (শাহাদাত) সব ষড়যন্ত্র এবার মোকাবিলা করা হবে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে মোট ১০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. কামরুল আহসান মহারাজ, বিএনপির মো. আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টি থেকে আবদুল জলিল হাওলাদার, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মো. জালাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. জসীম উদ্দিন, মো. ছিদ্দিকুর রহমান পান্না, স্বতন্ত্র নিজাম উদ্দিন ও মহাসিনা মিতু। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বরগুনা পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার। ৩১ জানুয়ারি ভোট হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.