শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২১ পূর্বাহ্ন

বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাসেবা চরম বিপাকে

বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাসেবা চরম বিপাকে

বরিশাল প্রতিনিধি:

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে অর্ধেকেরও বেশি চিকিৎসকের পদ শূন্য। এর মধ্যেই আরও আটজন মেডিক্যাল অফিসারসহ বিভিন্ন পদের চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

ফলে সর্ববৃহৎ সরকারী চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতালের পরিচালক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের সঙ্গে কথা বললেও কোন সুফল মেলেনি। অথচ এ হাসপাতাল থেকে বদলিকৃত আটজনসহ একই আদেশে আরও দুইজনকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বদলিকৃত সব মেডিক্যাল অফিসার পদোন্নতি পেয়ে জুনিয়র কনসালটেন্ট হয়েছেন। কিন্তু তার হাসপাতালে এ ধরনের কোন পদ না থাকায় এখানে তাদের পদায়ন সম্ভব নয়। তাই মন্ত্রণালয় তাদের অন্যত্র বদলি করেছে। তবে মন্ত্রণালয় ইচ্ছে করলে তাদের অন্যত্র বদলি করলেও এখানে সংযুক্তির মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাবার বিধান আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এক হাজার শয্যার শেবাচিম হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৮শ’ রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে। কোন কোন সময় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা দুই হাজারও অতিক্রম করছে। বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও বাগেরহাটের রোগীরা পর্যন্ত এ বিশেষায়িত হাসপাতালটিতে চিকিৎসার জন্য আসেন। ফলে এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে আরও কমপক্ষে চার হাজার রোগী চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ করছেন। কিন্তু নিকট অতীতের পাঁচশ’ শয্যার এ হাসপাতালটির জনবল মঞ্জুরি বৃদ্ধি না করেই এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীর অভাবে রয়েই গেছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সরকারী এ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে পাঁচশ’ শয্যার মঞ্জুরিকৃত ২২৪ চিকিৎসক পদের মধ্যে কর্মরত ছিলেন ১১০ জনের মতো। কিন্তু সেখান থেকেও আটজনকে বদলি করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের দায়িত্বশীল একাধিক স‚ত্রে জানা গেছে, শেবাচিম হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ১০ জন মেডিক্যাল অফিসার পদের বিপরীতে এখন মাত্র একজন কর্মরত রয়েছেন। গোটা হাসপাতালে ডেন্টাল বিভাগের একমাত্র জুনিয়র কনসালটেন্টের পদে কোন চিকিৎসকই নেই। রেজিস্ট্রারের ৩৩ চিকিৎসকের ১৫টি পদই শ‚ন্য। ৬৬ জন সহকারী রেজিস্ট্রার পদের ৪৭টি পদ শ‚ন্য। এছাড়া হাসপাতালের ৪৬ জন মেডিক্যাল অফিসারের ২০টি পদেই কোন জনবল নেই। এমনকি নব সৃষ্ট ২০টি মেডিক্যাল অফিসার পদের বিপরীতেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ছয়জন। ২০ জন ইনডোর মেডিক্যাল অফিসারের আটটি পদ শ‚ন্য। বিশাল এ হাসপাতালে মাত্র একজন সিনিয়র প্যাথলজিস্ট থাকলেও চারজন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট আছেন দুইজন।

অতিস¤প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে শেবাচিম হাসপাতালের আটজন ছাড়াও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালেরও একজন চিকিৎসককে বদলি করায় সেখানেও সঙ্কট ঘনীভ‚ত হতে চলেছে। ৩২ জন চিকিৎসকের মঞ্জুরিকৃত মহানগরীর এ হাসপাতালটিতে আগে থেকেই নয়টি পদ শূন্য ছিল। আরও একজনকে বদলির ফলে একশ’ শয্যার ওই হাসপাতালটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পদই শূন্য হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana