ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নলছিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন—এমন অভিযোগে সামাজিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মিলন কান্তি দাস, তিনি প্রতিষ্ঠানটির হিন্দু ধর্মাবলম্বী একজন শিক্ষক, তার বিরুদ্ধে গত ২১ মে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার আজিমের স্বাক্ষর নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ মে মিলন কান্তি দাস ক্লাস চলাকালীন সময়ে এমন বক্তব্য প্রদান করেছেন যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এতে তাকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করছেন। ইসলামপন্থী নেতা এইচ এম সরদার মুসা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে কটুক্তি করে কোন ছাড় পাবে না ইনশাআল্লাহ।” তিনি আরও জানান, প্রশাসন, রাজনীতি ও ধর্মীয় নেতাদের আলোচনার মাধ্যমে তিনটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে— ১. অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর জবাব দিতে হবে। ২. উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। ৩. তার কর্মকাণ্ড কোনো রাজনৈতিক বা উগ্রপন্থী দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ কিনা, তা নজরদারিতে রাখা হবে। স্থানীয় আরেক ইসলামপন্থী নেতা ডা. মিজানুর রহমানও বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিলন কান্তি দাস। তিনি বলেন, “আমি এমন কোনো বক্তব্য দিইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
এ বিষয়ে জানতে নলছিটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের উপজেলা প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জলিলুর রহমান আকন্দের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলামকেও একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি এবং হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার আজিম জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। শিক্ষক জবাব দেওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং প্রশাসনের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে।
উল্লেখ্য, গত পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনি হিন্দু ধর্ম বিষয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের যোগসাজশ বাংলা বিষয়ে মাষ্টর ট্রেইনার বনেও গেছেন। তিনি প্রায়ই প্রধান শিক্ষককে মানেজ করে ভারত সফরে যান। স্থানিয় বেশ কয়েকজন জানান, তিনি এতবেশী ভারতে আসা যাওয়া করেন দেখলে বোঝার উপায় নেই ভারত যাচ্ছেন নাকি ভারত থেকে ফিরে আসছেন! তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' কিংবা উগ্রপন্থি ইসকন এর সক্রিয় এজেন্ডও হতে পারেন বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করছেন। তিনি সম্পূর্ন ঠান্ডা মাথায় হিন্দু ও মুসল মানদের মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টি করার লক্ষেই একাজ করে থাকতে পারে বলেও তারা মন্তব্য করেন। এসমস্ত বিষয়ে তদন্তেরও দাবী তোলেন তারা। তাকে স্কুল থেকে অপসারন না করা হলে মানববন্ধন সহ কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.