অনলাইন ডেস্ক:
২০০৭সালের ১৫ নভেম্বর রাতের ঘূর্ণিঝড় সিডর কেড়ে নেয় পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় জেলার ৬৭৭ জনের প্রাণ। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ৫৫ হাজার ঘরবাড়ি। সিডরে বিধ্বস্ত হয় জেলার ৯০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও রাস্তাঘাট।
এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের চরখালী, গোলখালী, লোহালিয়া, পায়রাগঞ্জ, লাউকাঠীসহ উপকূলবাসী। শুধু মানুষই নয়, গৃহপালিত পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণীও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ আজও সেই দুর্বিষহ স্মৃতি বহন করে চলেছেন।
জেলাগুলোর কয়েক হাজার বাড়িতে সৃষ্টি হয়েছিল শোকাবহ পরিবেশ, ঝড়ে এইদিনে আপনজনদের হারিয়ে ফেলেছেন তারা। কেউ কেউ বেঁচে গেলেও এই দিনটি হয়ে ওঠে এক বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্ন। হাজার হাজার মানুষ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বয়ে বেড়াচ্ছেন এইদিনে পাওয়া আঘাতের ক্ষত।
রহিমা বেগম নামে উপকূলের এক নারী বলেন, ‘২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর নদীতে বিলীন হয়ে যায় আমাদের ভিটামাটি। স্থায়ী মেরামত না হওয়ায় এখনো সেখানে জোয়ার ভাটা চলছে। তখন থেকে আমরা বেড়িবাঁধের পাশে একটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছি।’
তিনি বলেন, ‘এখানেও শান্তিতে নেই। গেলো কয়েক বছরে ফণী, বুলবুল, আম্পানসহ একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশ্রয়স্থলটি। শুনলাম আবার নতুন ঝড় আসবে এতে আবারও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় আছি।’
আবদুর রহিম নামে আরকজন বলেন, ‘ঝড় এলেই সবাই সাইক্লোন শেল্টারে যেতে বলে। কিন্তু বাড়িতে হাস, মুরগি, গরু, ছাগল ফেলে রেখে যেতে পারি না। অনেক সময় জীবন বাজি রেখে বাধ্য হয়ে বাড়িতে পড়ে থাকতে হয়।’
তবে প্রকৃতিতে সিডর যে ছাপ রেখে গেছে তা এখনও মুছে ফেলতে পারেনি মানুষ, কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেই ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি। এর মধ্যেই আবার চোখ রাঙ্গাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং; তাই ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলে চরম শঙ্কা আর আতঙ্কে থাকে এলাকাবাসী।
সিডরের মতো সিত্রাং যেন কারো প্রাণ না নিতে পারে সেজন্য এলাকায় উঁচু বেড়িবাঁধের দাবি জানান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দীকি।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কাইসার আলম জানান, খুব শিগগিরই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে জরুরিভাবে বেড়িবাঁধের কাজ করা হবে।
জেলায় মোট বেড়িবাঁধ ১৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে বর্তমানে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে ৬ কিলোমিটার ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ কিলোমিটার।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.