ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠিতে কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও নদীর পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে বিষখালি ও সুগন্ধা নদীতে ভাঙন। বিলীন হয়েছে বসতি ঘর, সৃজিত গাছ, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাটসহ আবাসিক এলাকার কয়েক একর জমি। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব ভাঙন কবলিতরা।
রাজাপুর উপজেলার বাদুরতলা এলাকার বৃদ্ধা দুধ মেহের বলেন, নদী ভাঙনের তৃতীয় দফায় এবার সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। পিতা-মাতার একমাত্র আদোরের সন্তান হিসেবে নাম রেখেছিলেন দুধ মেহের। পিতৃকূলে কেউ নাই স্বামী বাড়িতেও একমাত্র পুত্র সন্তান ছাড়া আর কেউ নাই। স্বামীর বাড়ির জমিতে বসতিঘর দুইবার ভেঙে গেছে, এবারে তৃতীয় দফায় ভাঙনে সব শেষ হয়ে গেছে। এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ২০০৭ সালের সিডরে তাও উড়িয়ে নিলে সরকার একটি ত্রাণের ঘর দেয়। ২লাখ টাকার ঘরে থাকতে কিস্তি উঠিয়ে আরো দেড় লাখ টাকা খরচ করে বারান্দা দিয়ে রইছি।
গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঘরের মধ্যে ঘুমে। এলাকার লোকজনে চিল্লাচিল্লি করে আমারে উঠাইছে। আর বলছে বুড়ি তোমার ঘর গেছে, তুমিও ডুইবা যাবা। তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসো। এই হৈ চৈ চিল্লাচিল্লি শুনে একটি কাঁথার গাষ্ঠি নিয়ে বের হইছি। আর কিছু পাইনাই, সব শেষ হয়ে গেছে। ঘটনা শুনে ঝালকাঠি শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছেলে মানিক ছুটে আসলেও কিছু ডাল-চাল ও শুকনা খাবার দিয়ে চলে গেছে।
ওই এলাকার হাসি বেগম বলেন, ৩০ বছর ধরে এই এলাকায় স্বামীর বাড়িতে বসবাস। সেই থেকেই দেখতেছি ভাঙতে ভাঙতে দুই কিলোমিটারের বেশি ঢুকেছে। বেরিবাধ না থাকায় ভাঙন ও পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে যায়। দুধ মেহেরের ঘর যেদিন ভাঙছে ওই সময় প্রায় ৩০ফুট দূর থেকে ভেঙে এসেছে। ঘর ভাঙার কড়কড় শব্দ শুনে আমরা গ্রামবাসী দৌড়ে এসে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অন্য কোন মালামাল আর রাখতে পারিনি।
মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, বিষখালী নদীর ভাঙনে বাদুরতলা এলাকার বৃদ্ধার ঘর ও মল্লিক বাড়ি এলাকার রাস্তাসহ গাছ-পালা বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে নদী ভাঙন রক্ষায় বারবারই আবেদন জানিয়েছি।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম নিলয় পাশা বলেন, নদী ভাঙন রোধে ৮৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই প্রকল্প গৃহীত হলে নদী ভাঙনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.