বরগুনার বেতাগী উপজেলায় কেন্দ্রের ভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষা চলাকালীন প্রতিষ্ঠানের স্টাফদের পাহারায় রেখে পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পরীক্ষা কেন্দ্র কমিটির সভাপতি মো. সুহৃদ সালেহীনকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানালে তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
মঙ্গলবার পরীক্ষা চলাকালীন বেলা ১২টায় করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে এই প্রতিবেদক মূল ফটকে তালাবদ্ধ দেখেন। এ সময় তালাবদ্ধ গেটের বাইরে মাদ্রাসার স্টাফদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন কেন্দ্র সচিব ও এ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ মো. মাহমুদুল হাছান ফেরদৌস। এ সময় গেটের আশপাশে পুলিশের উপস্থিত ছিল না।
এদিকে ফটকে দায়িত্বরত গার্ডকে সাংবাদিকেরা ভেতরে প্রবেশের জন্য তালা খুলতে বললে মোবাইলে কথা বলতে আড়ালে চলে যান। কিছুক্ষণ পর মোবাইলে কথা বলা শেষে তিনি সাংবাদিকদের পরীক্ষা কক্ষে নিয়ে যান।
ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষে গিয়ে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্র সচিবের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ছোপখালী জহুর উদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিচ্ছেন। এ সময় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অন্য একটি ভবনের অফিস কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে তিনি কেন্দ্রে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, ‘করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা কেন্দ্রের ভবনের গেটে তালা দিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দেয়। এ জন্য তারা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আলাদা টাকাও আদায় করেছে।’
পরীক্ষা কেন্দ্রের মূল ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে করুণা মোকামিয়া কমিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব শাহ মো. মাহমুদুল হাছান ফেরদৌস বলেন, যে কেউ কেন্দ্রে যেন প্রবেশ করতে না পারে তাই গেটে তালা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রে পুলিশ না থাকার বিষয়ে এই অধ্যক্ষ বলেন, ‘পুলিশ হয়তো ওয়াশ রুমে গিয়েছিল।’
কেন্দ্রে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার এই প্রতিষ্ঠানের মতো সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা বাংলাদেশের আর কোথাও হয় না। আমি ভালো কাজ করি এত অভিযোগ।’
উপজেলার কলেজ ও মাদ্রাসার দায়িত্ব প্রাপ্ত একাধিক কেন্দ্র সচিব জানায়, পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের ফটকে তালা দেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য গেটের বাইরে পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে লোক থাকবে।
কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এমাদুল হক বলেন, এই কেন্দ্রে যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন তিনি ছুটিতে থাকায় আমি অতিরিক্ত হিসেবে এসেছি। কেন্দ্রে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে এবং ভেতর কোনো সমস্যা হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.