বার্তা ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৮/১০ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ও পানি উপচে পড়ে উপজেলা পরিষদের অফিস পাড়া, আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ২০টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্ধী রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। উপজেলা পরিষদ চত্ত¡র ও সদরের বিভিন্ন রাস্তা ঘাট ৩/৪ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত হয়। উপজেলা হিসাব রক্ষক কার্যালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, বিআরডিবি, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ভূমি অফিস, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কক্ষে পানি ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও নথিপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
[caption id="attachment_1794" align="aligncenter" width="700"] উপজেলা পরিষদের অফিস পাড়া ও আবাসিক এলাকা প্লাবিত[/caption]
এদিকে দুই দিন থেকে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে শতশত পুকুর ও ঘেরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পানের বরজ, কলা বাগানসহ রবি শস্যে ক্ষেত। পানি বৃদ্ধিতে বিষখালী নদীর তীরবর্তী আমুয়া, ছোনাউটা, ঘোসের হাট, বড় কাঠালিয়া, হেতালবুনিয়া, কচুয়া, শৌলজালিয়া, সোনার বাংলা, রগুয়ার দড়িরচর, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আওরাবুনিয়াসহ ২০টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব এলাকার আঙ্গিনা, বসত ও রান্না ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় ও অভ্যান্তরীণ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
[caption id="attachment_1795" align="aligncenter" width="700"] পানিতে ডুবে গেছে উপজেলা সদরের সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সামনের সড়ক[/caption]
উপজেলার পানিবন্ধি অসহায় অনেক পরিবারের অভিযোগ খেয়ে না খেয়ে থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে কোন খাবার সামগ্রী দেওয়া হয়নি।
বিষখালী নদীর বাঁধ ভাঙ্গন কবলিত এলাকার পানিবন্ধি আমেনা বেগম বলেন, বিষখালী নদীর অবদা ভাইঙ্গা পানি আইয়া ঘর তলাইয়া গেছে। ঘরে থাহা যায় না গরু-বাহুর উপজেলায় নিয়া রাখছি। চুলায় রাদ্ধার কায়দা নাই। এখন পর্যন্ত কোন সায় সাহায্য ও খাবার দাবার কিছুই পাই নায়। ছেলে মেয়ে নিয়া খুবই কষ্টে আছি।
[caption id="attachment_1796" align="aligncenter" width="700"] কাঠালিয়ার লঞ্চঘাট এলাকায় পানি বন্ধী এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।[/caption]
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. তারিকুজ্জামান জানান, উপজেলায় পানি ওঠার প্রধান কারন বিষখালী নদীতে বেড়িবাঁধ না থাকা। যদি বেড়িবাঁধ থাকতো তবে এভাবে পানি উঠে উপজেলা তলিয়ে যেত না। আমাদের দুর্ভাগ্য সরকারি কর্মকর্তারা ও জনপ্রতিনিধি’রা দৃষ্টি দেয় না। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও জনপ্রতিনিধিদের অদক্ষ্যতাই দায়ী।
উপজেলা হিসাব রক্ষক কার্যালয়ের অডিটর মো. মাহাফুজুর রহমান জানান, অফিসের কক্ষে পানি ঢুকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও নথিপত্র নষ্ট হয়েছে।
[caption id="attachment_1797" align="aligncenter" width="700"] বিষখালী নদীর ভাঙন ও উপজেলা পরিষদ পরিদর্শন করছেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী।[/caption]
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বুধবার দুপুরে কাঠালিয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা ও বেরিবাঁধ পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. এমাদুল হক মনির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুর রহমানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে কাঠালিয়া সদরের বিষখালী নদীর ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি দ্রæত মেরামতের আশ্বাস দিয়ে বলেন ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি স্থায়ীভাবে নির্মানের জন্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে। যাতে দ্রæত বাস্তবায়ন হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.