বিশেষ প্রতিনিধি:
অবশেষে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশে দীর্ঘ একমাস পর ঝালকাঠির কাঠালিয়ার সাবেক এসি ল্যান্ড সুমিত সাহার (বর্তমান কর্মস্থল বরগুনার তালতলী উপজেলা) বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদলতের ভয় দেখিয়ে ইটবাটা থেকে ঘুষ গ্রহণ ও আত্মসাতের ঘটনার অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। আজ বুধবার (৩মার্চ) বিকেল তিন টায় ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামাল হোসেনের কার্যালয়ে এ তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তদন্তকালে উভয় পক্ষকে স্বাক্ষ্য প্রমাণসহ উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। গত ০৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম এর দেয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসককে সহকারী কমিশনার ভূমি সুমিত সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরদিকে একই ঘটনার সাথে অভিযুক্ত কাঠালিয়া ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার মোঃ মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস.এম. ফরিদ উদ্দীন স্বাক্ষরিত(গত ১১ ফেব্রুয়ারি) এক চিঠিতে নির্দেশ প্রদান করেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে ঘুষ কেলেংকারীতে অভিযুক্ত এসি ল্যান্ড সুমিত সাহা ও নাজির মাঈনুল ইসলাম বিভাগী মামলা ও শাস্তি থেকে যে কোন উপায়ে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঘটনার পর থেকে ইটবাটা মালিক-স্বাক্ষী ও বিভিন্ন দফতরের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন।
তবে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এ ঘটনায় কে ফাঁসছেন, এসি ল্যান্ড না নাজির? প্রাপ্ত তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এসিল্যান্ড সুমিত সাহা চাকরি জীবনে প্রাথমেই কাঠালিয়া উপজেলায় যোগদারেন ৩মাসে তার ভাইসহ একাকি নিকট আত্মীয়র নামের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা কাঠালিয়া থেকে পাচাঁর করেন।
দীর্ঘ ২২ বছর শুন্য থাকার পর গত বছরের ০৮ অক্টোবর সুমিত সাহা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কাঠালিয়া উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি ভূমি অফিস ঘুষের আখড়ায় পরিনত করেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, জমির নামজারী, সই মোহর পর্চা, জলাশয় সংস্কার (খাল ও পুকুর) প্রকল্প থেকে, গাছ বিক্রিসহ ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা ও ফাইল থেকে ঘুষ নিতেন এসিল্যান্ড সুমিত।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে কাঠালিয়ার মেসার্স ত্বহা ব্রিকস ফিল্ডে এসিল্যান্ড সুমিত সাহা, তার অফিসের নাজির মাঈনুলসহ অন্যান্য কর্মচারী, পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্য নিয়ে অভিযান চালায়। এ সময় নানা অভিযোগ তুলে ইট ভাটার পার্টনার (মালিক) মোঃ শাহিন আকনের কাছে দশ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ভাটার মূল মালিক মোঃ এনামুল কবিরের শ্বশুর হাবিবুর রহমান ও কর্মচারী মফিজুলকে আটক করে কাঠালিয়া এসিল্যান্ড কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে বাটা মালিক পক্ষ চার লক্ষ টাকা দিলে ্আটককৃত দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং সুমিত সাহার স্বাক্ষরিত মামলার (নম্বর ০৫/২০২১ইং) আদেশে (ক্রমিক নং ৪৮০৮২৩) এর দুই লক্ষ টাকার একটি রশিদ ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের পর প্রশাসনে টনক নড়ে এবং এসি ল্যান্ড সুমিত সাহাকে বরগুনার তালতলী উপজেলায় এবং নাজির মাইনুল ইসলামকে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বদলী করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. শহীদুল আলম,
বার্তা সম্পাদক : মো. সাকিবুজ্জামান সবুর
অফিস: কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি- ৮৪৩০
মোবাইল: ০১৭১২৫২৯২৬৬, ০১৭৭৪৯৩৭৭৫৫
ই-মেইল: kathaliabarta@gmail.com
Copyright © 2025 কাঠালিয়া বার্তা. All rights reserved.